মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

শিশুদের ৫টি লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন

ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা শিশুর মধ্যে একধরনের জেদি মনোভাব তৈরি করে। তারা সবকিছুতে ‘না’ বলা শুরু করে এবং বাবা-মায়ের কথা শুনতে চায় না।

ছবিঃ কোলাজ

বাংলাফ্লো লাইফস্টাইল

ঢাকা: বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি হয়ে উঠেছে শিশুদের একমাত্র বিনোদনের উৎসও। অল্প বয়সেই শিশুরা মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রথম দিকে বিষয়টি সাধারণ মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে এই আসক্তি শিশুর আচরণে পরিবর্তন আনে এবং তা নানা সমস্যার জন্ম দেয়।

আপনার সন্তানের মধ্যেও কি এমন কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে? নিচে উল্লেখ করা ৫টি আচরণগত পরিবর্তন লক্ষ্য করলেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন—

১. বিরক্তি ও রাগের বহিঃপ্রকাশ

মোবাইল ব্যবহারে তাৎক্ষণিক আনন্দ পাওয়ার কারণে শিশুরা ধীরে ধীরে একে 'নেশা'র মতো গ্রহণ করে। ফলে ফোন থেকে দূরে রাখলেই তারা রেগে যায়, চিৎকার করে বা কান্নাকাটি শুরু করে। এক্ষেত্রে সামান্য কারণেই অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো একটি বড় সতর্ক সংকেত হতে পারে।

২. সামাজিক যোগাযোগে অনীহা

ফোনের জগতে ডুবে থাকা শিশুরা ধীরে ধীরে বাস্তব যোগাযোগ থেকে দূরে সরে যায়। বাবা-মা, ভাইবোন, বন্ধু বা শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে চায় না, একা থাকতে চায়। এটি তাদের সামাজিক দক্ষতা এবং আবেগীয় বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৩. মনোযোগের ঘাটতি

অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে শিশুদের মনোযোগের স্থায়িত্ব কমে যায়। ক্লাসে বা পড়াশোনার সময় তাদের মন থাকে অন্যত্র। তারা সহজেই বিভ্রান্ত হয় এবং প্রয়োজনীয় তথ্য ভুলে যেতে শুরু করে। এই আচরণ একাডেমিক পারফরম্যান্সেও প্রভাব ফেলতে পারে।

৪. ঘুমের সমস্যা

ফোনের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো শিশুর ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করে। তারা রাত জেগে ফোন ব্যবহার করে এবং সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে। এতে তাদের সারাদিন ক্লান্তি ও বিরক্তি দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি শিশুদের শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকিস্বরূপ।

৫. একগুঁয়ে ও অসহযোগী আচরণ

ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা শিশুর মধ্যে একধরনের জেদি মনোভাব তৈরি করে। তারা সবকিছুতে ‘না’ বলা শুরু করে এবং বাবা-মায়ের কথা শুনতে চায় না। নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করতে চায় ও নিয়ম মেনে চলতে অনীহা প্রকাশ করে।

কী করবেন অভিভাবক হিসেবে?

সময় বেঁধে দিয়ে ফোন ব্যবহার করতে দিন

বিকল্প বিনোদন যেমন বই পড়া, খেলাধুলা বা শিল্পচর্চায় উৎসাহ দিন

সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলুন ও মানসিক যোগাযোগ বাড়ান

প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন

শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়তে হলে এখনই সতর্ক হওয়া জরুরি। কারণ আজকের ছোট অভ্যাসই আগামীদিনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাফ্লো/আফি

Leave a Comment

Comments 0