লাইফস্টাইল ডেস্ক

ঢাকা: প্রচণ্ড গরমে এসি যেন মৌলিক চাহিদা হয়ে উঠেছে। সবার তো আর এসি কেনার সামর্থ্য থাকে না। তবে ঘরের ভেতর ছোট একটা বাগান এসি ছাড়াই আপনাকে দিতে পারে স্নিগ্ধ প্রশান্তি। এধরনের বাগানকে বলা হয় ইন্ডোর গার্ডেন। ঘর সাজানোর জন্য ব্যাবহ্রত হলেও, ঘরে প্রকৃতির শীতলতা আনতে ইন্ডোর প্ল্যান্ট বেশ কার্যকর। এটি তাপমাত্রা কমায় এবং পরিবেশকে আরো স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

গাছপালা ‘ট্রান্সপিরেশন’ নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানি বাষ্পে পরিণত করে বায়ুমণ্ডলে ছাড়ে। এই প্রক্রিয়া ঘরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যখন গাছ পানি বাষ্পে পরিণত করে, তখন তা আশপাশের বাতাস ঠান্ডা করে তোলে। একে প্রাকৃতিক এয়ার কুলার বললেও ভুল হবে না।

যেসব ইনডোর প্লান্ট ঘরের তাপমাত্রা কমাতে কার্যকর:

১. অ্যালো ভেরা

অ্যালো ভেরা শুধু ত্বকের যত্নে নয়, বরং ঘর ঠান্ডা রাখার জন্যও জনপ্রিয়। এর পাতায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা ট্রান্সপিরেশনের মাধ্যমে ঘরের পরিবেশ শীতল করে।

২. স্পাইডার প্লান্ট

সহজে বেড়ে ওঠে ও কম যত্নে টিকে থাকে। এটি বাতাস পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি ঘরের উষ্ণতা হ্রাসে সহায়তা করে।

৩. স্যনসেভেরিয়া

এই গাছ রাতে অক্সিজেন ছাড়ে, যা ঘুমের জন্য উপকারী এবং ঘরের বাতাস শীতল রাখতে সাহায্য করে।

৪. পিস লিলি

এটি শুধু ঘরকে ঠান্ডাই রাখে না, বরং ঘরের বাতাসে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক দূর করতেও সাহায্য করে।

৫. আরেকা পাম

এই গাছ বেশি আর্দ্রতা ছাড়ে, যা ঘরের শুষ্কতা কমিয়ে পরিবেশ ঠান্ডা রাখে।

৬. মানি প্ল্যান্ট

মানি প্ল্যান্ট শুধু ভাগ্য বা সৌভাগ্যের প্রতীক নয়, এটি ঘরের বাতাস শুদ্ধ করতেও কার্যকর। এর পাতা পানি ধরে রাখতে পারে এবং ট্রান্সপিরেশনের মাধ্যমে তা বাষ্প করে ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা কমিয়ে আনে। এটি খুব সহজে বড় হয় এবং কম আলোতেও টিকে থাকতে পারে, তাই ইনডোর ব্যবহারের জন্য এটি আদর্শ। এটি ঘরের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে বাতাসকে সতেজ রাখে।

এছারাও পারপেল হার্ট, হওয়ারথিয়া, লাকি ব্যাম্বো, এরাবিয়ান অয়াক্স সহ অনেক ইনডোর প্ল্যান্ট রয়েছে যা আপনার ঘরের বাগানে রাখতে পারেন।

ইনডোর গার্ডেনের যত্ন

গাছগুলো এমন জায়গায় রাখুন যেখানে আলো ও বাতাস আসে, তবে সরাসরি রোদে না।

নিয়মিত পানি দিন তবে অতিরিক্ত পানি দেবেন না। এই গাছগুলোতে সপ্তাহে একবার বা দুবার পানি দেয়াই যথেষ্ট। বাকি দিনগুলোতে শুধু পাতায় পানি স্প্রে করে দিতে পারেন।  

গাছের পাতা পরিষ্কার রাখুন, যাতে ফটোসিনথেসিস ভালোভাবে হয়।

ঘরের একাধিক কোণায় বিভিন্ন ধরনের গাছ রাখলে ঠান্ডা ভাব বেশি টের পাওয়া যায়।

অধিকাংশ ইনডোর গাছ পানিতে বেচে থাকে, এদের মাটি দরকার হয় না। এক্ষেত্রে ২/৩ দিন পর পর পানি বদলে দিতে হবে।

গরমের দিনে প্রাকৃতিকভাবে ঘর ঠান্ডা রাখার সবচেয়ে সহজ ও পরিবেশবান্ধব উপায় হতে পারে ইনডোর বাগান। এটি শুধু তাপমাত্রা কমায় না, বরং ঘরের সৌন্দর্য ও মানসিক প্রশান্তিও বাড়ায়।

বাংলাফ্লো/আফি