বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২২ বছরেও পূরণ হয়নি যে শূন্যতা, স্মরণে হাসির রাজা দিলদার।

দিলদার শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না, ছিলেন একজন বহুমাত্রিক শিল্পী। একবার মালেক আফসারীর ‘লাল বাদশা’ ছবির জন্য ‘শুধু ডিম দিয়ে পরিচয়’ শিরোনামে একটি গানও গেয়েছিলেন তিনি, যা বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।

ছবি-সংগৃহীত

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক

ঢাকা: আজ ১৩ জুলাই, বাংলা চলচ্চিত্রের ‘হাসির রাজা’, কিংবদন্তি কৌতুক অভিনেতা দিলদারের ২২তম প্রয়াণ দিবস। ২০০৩ সালের এই দিনে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান, দর্শকের মুখের হাসি কেড়ে নিয়ে। তিনি ছিলেন কমেডিয়ান, কিন্তু তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল যেকোনো নায়কের সমান। দুই দশক পেরিয়ে গেলেও, তাঁর অভিনয় আর হাসির ভঙ্গি আজও দর্শকদের মনে অমলিন এবং তাঁর তৈরি করা শূন্যতা আজও অপূরণীয়।

পর্দার আড়ালের দিলদার: দায়িত্বশীল স্বামী ও বাবা পর্দায় যাঁর কাজ ছিল দর্শকদের হাসানো, সেই দিলদার বাস্তব জীবনে ছিলেন একজন প্রাণবন্ত এবং অত্যন্ত দায়িত্বশীল মানুষ। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল দেলোয়ার হোসেন। চাঁদপুরে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী শুটিং সেটে সবসময় প্রাণখোলা হাসিতে ভরা থাকতেন এবং সহশিল্পীদের উৎসাহ দিতেন। তবে তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল তাঁর পরিবার। জানা যায়, তিনি কখনোই রাত ১০টার পরে শুটিং সেটে থাকতেন না, পরিবারের কাছে ফিরে যেতেন। দুই কন্যাসন্তানের জনক দিলদারের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বর্তমানে স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়িতেই থাকেন।

বহুমুখী প্রতিভা ও স্বীকৃতি: দিলদার শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না, ছিলেন একজন বহুমাত্রিক শিল্পী। একবার মালেক আফসারীর ‘লাল বাদশা’ ছবির জন্য ‘শুধু ডিম দিয়ে পরিচয়’ শিরোনামে একটি গানও গেয়েছিলেন তিনি, যা বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। অভিনয়ের ক্ষেত্রেও তিনি শুধু কমেডিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। তাঁর অভিনয় দক্ষতার সেরা স্বীকৃতি আসে ‘তুমি শুধু আমার’ ছবির জন্য, যখন তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

অপূরণীয় শূন্যতা ও অবিস্মরণীয় দিলদার: ১৯৭২ সালে ‘কেন এমন হয়’ সিনেমার মাধ্যমে মাত্র ২০ বছর বয়সে বড় পর্দায় তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর ‘বেদের মেয়ে জোসনা’, ‘বিক্ষোভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’-এর মতো অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করে তিনি হয়ে ওঠেন ঢালিউডের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর কমেডি ছিল অত্যন্ত সহজ এবং সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশ্লেষকদের মতে, দিলদারের মতো একজন কৌতুক অভিনেতা, যিনি একাই একটি সিনেমাকে টেনে নিয়ে যেতে পারতেন, তাঁর অনুপস্থিতি ২২ বছরেও বাংলা চলচ্চিত্রে পূরণ হয়নি।

আজকের এই দিনে ভক্তরা তাঁকে স্মরণ করছেন গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। তিনি হয়তো চোখের সীমানায় নেই, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া হাসি আর অভিনয় আজও কোটি দর্শকের হৃদয়ে বেঁচে আছে।

বাংলাফ্লো/এইচএম

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0