এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: ২০০৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘ওয়াফা: আ ডেডলি লাভ স্টোরি’, যেখানে বলিউডের প্রথম সুপারস্টার রাজেশ খান্নার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন তরুণী অভিনেত্রী লায়লা খান। কিন্তু এই সিনেমার মাত্র তিন বছর পরই, ২০১১ সালে, লায়লা তাঁর মা, ভাইবোনসহ পরিবারের মোট ছয়জন সদস্যকে নিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে যান। দীর্ঘ ১৭ মাস পর তাঁদের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয় এবং জানা যায় এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা, যার মূল হোতা ছিল লায়লারই সৎ বাবা, পারভেজ তাক।
সম্প্রতি মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের সাবেক কর্মকর্তা অম্বাদাস পোটে এক সাক্ষাৎকারে এই শিহরণ জাগানো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।
লায়লার মা সেলিনা তৃতীয়বার বিয়ে করেছিলেন পারভেজ তাককে। তাক লায়লার অভিনয় জগতে কাজ করা বা তাঁর জীবনযাপন মেনে নিতে পারতেন না। এ ছাড়াও, পরিবারের সম্পত্তি নিয়েও চলছিল তীব্র টানাপোড়েন।
এই দ্বন্দ্বের জেরেই, পারভেজ তাক হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি প্রথমে তাঁদের ইগাতপুরীর ফার্ম হাউসে নিজের এক সহযোগীকে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর, বেড়ানোর কথা বলে পুরো পরিবারকে সেই ফার্ম হাউসে নিয়ে যান।
সাক্ষাৎকারে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সেদিন সন্ধ্যায় বারবিকিউ এবং নাচগানের পর, পরিবারের সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে, তখন পারভেজ তাক এবং তাঁর সহযোগী লোহার রড ও ছুরি নিয়ে তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। লায়লার ভাই ইমরান বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও, তাঁদের বাঁচানো যায়নি।
এরপর, ছয়টি লাশ ফার্ম হাউসের একটি অসমাপ্ত সুইমিং পুলের গর্তে পুঁতে রাখা হয়। মৃতদেহগুলো গদি এবং বালিশ দিয়ে ঢেকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
প্রায় ১৭ মাস পর, বৃষ্টির কারণে ফার্ম হাউসের ওই জায়গার মাটি দেবে গেলে পুলিশের সন্দেহ হয়। দীর্ঘ সময় ধরে খোঁড়াখুঁড়ির পর সেখান থেকে ছয়টি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়, যা পরে লায়লা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বলে শনাক্ত করা হয়।
তদন্তের পর পারভেজ তাককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি তাঁর অপরাধ স্বীকার করেন। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মামলা চলার পর, ২০২৪ সালে মুম্বাই সেশনস কোর্ট পারভেজ তাককে মৃত্যুদণ্ড দেয়। আদালত এই ঘটনাকে ‘সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দেওয়া এক বর্বরোচিত কাজ’ বলে অভিহিত করে।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0