এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: পর্দায় মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি কয়েক প্রজন্মের দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছেন, অর্জন করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আজীবন সম্মাননা। কিন্তু পর্দার সেই সাফল্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে বঞ্চনা আর আক্ষেপের এক করুণ গল্প। সম্প্রতি কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডলি জহুর জানিয়েছেন, ঢাকাই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি তাঁর ৩৪ লাখ টাকা পারিশ্রমিক আজও পরিশোধ করেনি। সবচেয়ে হৃদয়বিদারক বিষয় হলো, এই টাকাটা তখন তাঁর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল ক্যান্সারে আক্রান্ত স্বামীর চিকিৎসার জন্য।
এক সাক্ষাৎকারে ডলি জহুর তাঁর জীবনের সেই ভয়াবহ সময়ের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামী যখন ক্যান্সারে আক্রান্ত, ঠিক তখনই তাঁর মা-ও একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন তাঁর টাকার খুব প্রয়োজন, তখন তিনি প্রযোজকদের কাছে তাঁর পাওনা টাকা চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “সেই সময় আমি অনেক সিনেমা করি, অনেকের কাছে টাকা পাইতাম। ...ওই সময় আমি কেঁদে কেঁদে বলছি- ‘কিছু টাকা আমার তুলে দেন আমার স্বামীকে নিয়ে ব্যাংককে যাব।’”
কিন্তু তাঁর সেই কান্নাভেজা আবেদনেও কারও মন গলেনি। তিনি বলেন, “যাকে দায়িত্ব দিলাম (টাকা তোলার জন্য), তার কাছেও টাকা পাইতাম। এরপর তো আর ওই লোক যোগাযোগই করে নাই, নিজেও কোনো টাকা দেয় নাই। এমন সময়ে এক পয়সাও ইন্ডাস্ট্রি থেকে পাইনি।”
ডলি জহুর আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে চরিত্রাভিনেতাদের প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হয় না। তাঁর ভাষায়, “আমরা যারা মা-খালা চরিত্রে অভিনয় করি, কোনো মর্যাদা ইন্ডাস্ট্রিতে পাইনি- এটা সত্যি কথা। আমার সারাজীবন শুনতে হয়েছে, ‘আপনি টাকার জন্য কাজ করেন নাকি?’”
এত বঞ্চনা আর কষ্টের পরেও অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা কমেনি এই কিংবদন্তির। চলতি মাসেই জীবনের ৭০তম বসন্তে পা রাখা ডলি জহুর বলেন, “আজীবন অভিনয়ই করে যেতে চাই।” তিনি এখনও তৌকীর আহমেদ এবং মহিন খানের মতো নির্মাতাদের সঙ্গে নাটকে কাজ করে চলেছেন। তবে যে ইন্ডাস্ট্রিকে তিনি এতকিছু দিয়েছেন, সেই ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে পাওয়া এই প্রতিদান তাঁর মনে এক গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0