এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: আজ থেকে ঠিক ২৩ বছর আগে, ২০০২ সালে মুক্তি পেয়েছিল সঞ্জয় লীলা বানসালির স্বপ্নের প্রজেক্ট ‘দেবদাস’। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমাটি শুধু একটি চলচ্চিত্র ছিল না, ছিল ভালোবাসা, যন্ত্রণা ও বেদনার এক শৈল্পিক মহাকাব্য। শাহরুখ খান, ঐশ্বরিয়া রাই এবং মাধুরী দীক্ষিতের জাদুকরী অভিনয়ে এই প্রেম-বেদনার কাহিনি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে রয়েছে। মুক্তির ২৩ বছর পরেও এর আবেদন এতটুকুও কমেনি।
এক অবিস্মরণীয় নির্মাণ: সঞ্জয় লীলা বানসালির পরিচালনা, বিশাল সেট, মনমাতানো সুর এবং হৃদয়স্পর্শী গল্প— সবকিছু মিলিয়ে ‘দেবদাস’ ছিল এক প্যাকেজ। দেবদাসের যন্ত্রণা, পারোর অভিমান আর চন্দ্রমুখীর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা— এই তিন চরিত্রের রসায়ন আজও দর্শককে মুগ্ধ করে। তবে এই সিনেমার গান এবং অভিনয়ের মতোই আরও একটি অনন্য দিক ছিল এর সংলাপ, যা আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
যে সংলাপ আজও অমর: সঞ্জয় লীলা বানসালী ও প্রকাশ রঞ্জিত কাপাডিয়ার লেখা এই সিনেমার সংলাপগুলো যেমন ছিল আবেগে টইটম্বুর, তেমনই ছিল কাব্যিক এবং গভীর অর্থবোধক। ২৩ বছর পরেও এই সংলাপগুলো থিয়েটার, মঞ্চনাটক এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বারবার ফিরে আসে। নিচে রইল ‘দেবদাস’ সিনেমার ১০টি চিরস্মরণীয় সংলাপ, যেগুলো আজও অনুরাগীদের হৃদয়ে গেঁথে আছে—
১. ইঁউ নজর কি বাত কি, অউর দিল চুরা গয়ে... (এভাবে শুধু চোখে চোখ রেখেই মনটা চুরি করে নিলে...)
২. এক বাত হোতি থি, তব তুম বহুত ইয়াদ আতি থি... (একটা কথা হলেই তোমার খুব মনে পড়ত...)
৩. دس সাল পহলে তুমহারে নাম কা দিয়া জলায়া থা ম্যানে... (দশ বছর আগে আমি তোমার নামের প্রদীপ জ্বালিয়েছিলাম...)
৪. পেয়ার কা কারবার তো বহুত বার কিয়া হ্যায়, মাগর পেয়ার সিফ এক বার... (ভালোবাসার ব্যবসা অনেকবার করেছি, কিন্তু প্রেম? শুধুই একবার...)
৫. দিল কে চালোঁ কো কোই শায়েরি কহে তো পরভা নেহি... (মনের ক্ষতকে কেউ কবিতা বললে, আমি কিছুমাত্র ক্ষেপি না...)
৬. পেয়ার আত্মা কি পরছাঁই হ্যায়... (ভালোবাসা আত্মার প্রতিচ্ছবি...)
৭. বাবুজি নে কহা গাঁও ছোড় দো, সব নে কহা পারোকো ছোড় দো, পারো নে কহা শারাব ছোড় দো, আজ তুমনে কহ দিয়া হাভেলি ছোড় দো। এক দিন আয়েগা, জব ওহ কহেঙ্গে- দুনিয়া হি ছোড় দো.... (বাবা বলেছিলেন, গ্রাম ছেড়ে দাও। সবাই বলেছিল, পারোকে ছেড়ে দাও। পারো বলেছিল, মদ ছেড়ে দাও। আজ তুমি বললে, প্রাসাদ ছেড়ে দাও। একদিন আসবে, যেদিন ওরা বলবে- গোটা পৃথিবীটাই ছেড়ে দাও।)
৮. কৌন কমবখত বরদাশত করনে কো পিতা হ্যায়? (কোন হতভাগা সহ্য করার জন্য মদ খায়?) – (চুনিলালের কণ্ঠে)
৯. আপনে হিস্সে কি জিন্দেগি তো হম জি চুকে চুন্নি বাবু... (আমার ভাগের জীবনটা তো আমি বাঁচিয়েই ফেলেছি, চুন্নি বাবু...)
১০. অউরত মা হোতি হ্যায়, বহেন হোতি হ্যায়, পত্নী হোতি হ্যায়, দোস্ত হোতি হ্যায়... অউর জব ওহ কুছ নেহি হোতি, তো তওয়াইফ হোতি হ্যায়... (নারী মা হয়, বোন হয়, স্ত্রী হয়, বন্ধু হয়... আর যখন সে কিছুই হয় না, তখন বারবণিতা হয়ে ওঠে...)
এই সংলাপগুলোই ‘দেবদাস’ সিনেমাকে শুধু একটি প্রেমের গল্প হিসেবেই নয়, বরং এক দার্শনিক গভীরতা দিয়েছে, যা ২৩ বছর পরেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0