এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: তাঁর জীবনের গল্প যেন কোনো সিনেমার চিত্রনাট্য। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, পরিবারের হাল ধরতে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে পা রাখেন তিনি। এরপর কপিল দেবের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, কমল হাসানের সঙ্গে বিয়ে-পূর্ববর্তী সন্তান এবং বিতর্কিত সম্পর্ক— সব মিলিয়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সারিকা এক আলোচিত এবং সংগ্রামী চরিত্র।
জীবনের শুরুতেই সারিকাকে কাঁধে তুলে নিতে হয়েছিল পরিবারের দায়িত্ব। ১৯৬৭ সালে, মাত্র পাঁচ বছর বয়সে, তিনি সুনীল দত্তের ‘হামরাজ’ ছবিতে একটি ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তাঁর। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি কখনো স্কুলে যাইনি। ...আজও আফসোস করি—শৈশবটা হারিয়ে গেছে।”
সারিকার জীবনের সবচেয়ে আলোচিত অধ্যায়টি হলো কিংবদন্তি অভিনেতা কমল হাসানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। ১৯৮৪ সালে যখন তাঁদের প্রেম শুরু হয়, তখন কমল হাসান বিবাহিত ছিলেন। সমাজের চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই তাঁরা একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন।
১৯৮৬ সালে, বিয়ের আগেই, তাঁদের প্রথম কন্যা শ্রুতি হাসানের জন্ম হয়। এই ঘটনার জন্য সারিকাকে তখন ‘মন্দ নারী’র তকমাও দিয়েছিল সমাজের একাংশ। এই বিষয়ে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি শুধু তাঁকে (কমল হাসান) জানিয়েছিলাম, আমি সন্তান ধারণ করেছি। আমি কখনো বলিনি, স্ত্রীকে ছেড়ে আমাকে বিয়ে করতে হবে। এটা ছিল আমার সিদ্ধান্ত।”
প্রথম সন্তানের জন্মের পর, কমল হাসান প্রকাশ্যে সন্তানের পিতৃত্ব স্বীকার করেন। ১৯৯১ সালে তাঁদের দ্বিতীয় কন্যা অক্ষরা হাসানের জন্মের পর তাঁরা বিয়ে করেন। তবে সেই বিয়েও ২০০৪ সালে বিচ্ছেদে পরিণত হয়।
জীবনের এত চড়াই-উতরাইয়ের পরেও, সারিকার কোনো আফসোস নেই। তিনি বলেন, “আমি আজ যে পর্যন্ত এসেছি, সে জন্য গর্বিত। আমার জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত আমাকে এই পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে।” জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী এই অভিনেত্রী এখন তাঁর দুই মেয়ের সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে নিজের ছন্দে জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁর জীবনদর্শন একটাই— “নিজের খুশিতে জীবন কাটান, কাউকে আঘাত না দিয়ে মজা করুন।”
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0