এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: আজ ৭ আগস্ট, অস্কারজয়ী হলিউড অভিনেত্রী শার্লিজ থেরনের ৫০তম জন্মদিন। ‘মনস্টার’, ‘ম্যাড ম্যাক্স: ফিউরি রোড’, ‘দ্য ইতালিয়ান জব’— এমন অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করে যিনি কয়েক দশক ধরে বিশ্বজুড়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন, তাঁর জীবনের গল্প যেকোনো সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়। দক্ষিণ আফ্রিকার এক দুঃসহ শৈশব, নিউইয়র্কে প্রায় কপর্দকশূন্য অবস্থা এবং ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে ভাগ্য বদলে যাওয়ার মতো নাটকীয়তায় ভরা তাঁর জীবন।
শার্লিজ থেরনের শৈশবের সবচেয়ে ভয়ংকর স্মৃতিটি ঘটে যখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর। ১৯৯১ সালের ২১ জুন, তাঁর মদ্যপ বাবা বন্দুক হাতে বাড়িতে এসে তাঁর এবং তাঁর মায়ের উপর চড়াও হন এবং গুলি চালান। আত্মরক্ষার জন্য শার্লিজের মা পাল্টা গুলি ছুড়লে, ঘটনাস্থলেই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। এই দুঃসহ স্মৃতি নিয়েই তিনি মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন।
তাঁর স্বপ্ন ছিল নৃত্যশিল্পী হওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে তিনি ইউরোপ ঘুরে নিউইয়র্কে আসেন এবং ব্যালে নাচ শিখতে শুরু করেন। কিন্তু হাঁটুতে গুরুতর চোট পাওয়ায় তাঁর সেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। তখন মায়ের দেওয়া মাত্র ৩০০ ডলার নিয়ে তিনি ভাগ্য অন্বেষণে লস অ্যাঞ্জেলেসে পাড়ি জমান।
সেই ৩০০ ডলারও দ্রুতই ফুরিয়ে যায়। শার্লিজ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এমনও দিন গেছে, যখন তাঁকে রেস্তোরাঁ থেকে রুটি চুরি করে খেতে হয়েছে।
একদিন তিনি মায়ের পাঠানো একটি চেক ভাঙাতে হলিউড বুলেভার্ডের এক ব্যাংকে যান। কিন্তু তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হওয়ায়, ব্যাংক কর্মী চেকটি ভাঙাতে রাজি ছিলেন না। এই নিয়ে তিনি যখন ব্যাংক কর্মীর সঙ্গে চিৎকার করে ঝগড়া করছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর পেছনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্যালেন্ট এজেন্ট জন ক্রসবি তাঁকে দেখতে পান। তিনিই শার্লিজকে অভিনয়ের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন এবং তাঁর ভাগ্য বদলে যায়।
‘চিলড্রেন অব দ্য কর্ন ৩’-এ সংলাপহীন একটি চরিত্রের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হয়। এরপর ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ সিনেমায় আল পাচিনোর সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ তাঁকে পরিচিতি এনে দেয়। ২০০৪ সালে ‘মনস্টার’ সিনেমায় এক সিরিয়াল কিলারের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তিনি অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন।
একসময়ের ৩ ডলারের জন্য সংগ্রাম করা সেই মেয়েটিই আজ হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া তারকাদের একজন, যাঁর মোট সম্পদ প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার। তাঁর এই জীবন কাহিনী অধ্যবসায় এবং ঘুরে দাঁড়ানোর এক অবিশ্বাস্য অনুপ্রেরণা।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0