রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কম বাজেটের ‘হোম ভিডিও’ থেকে বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি

নলিউডের সাফল্যের মূল কারণ হলো এর গল্প। তারা নাইজেরিয়া এবং আফ্রিকার সাধারণ মানুষের পারিবারিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে, যা দর্শকদের সঙ্গে সহজেই সংযোগ স্থাপন করে।

ছবি-সংগৃহীত

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক

ঢাকা: সপ্তাহে প্রায় ৫০টি সিনেমা, বছরে প্রায় ২,৫০০! ১০ লাখ কর্মী এবং দেশের জিডিপিতে ২.৩ শতাংশ অবদান— এই পরিসংখ্যানগুলো কোনো হলিউড বা বলিউডের গল্প নয়, এটি আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, যা নলিউড নামে পরিচিত। কম বাজেটের ‘হোম ভিডিও’ থেকে যাত্রা শুরু করে, নলিউড আজ ভারত ও আমেরিকার পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র শিল্প, যা আয় এবং নির্মাণ সংখ্যায় চীন বা যুক্তরাজ্যের মতো দেশকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে।

নব্বইয়ের দশকে ৩৫ মিলিমিটার ফিল্মের ব্যয়বহুলতার কারণে, নাইজেরিয়ার নির্মাতারা কম খরচের ভিএইচএস (VHS) টেপ দিয়েই সিনেমা বানানো শুরু করেন। ১৯৯২ সালে, ভিএইচএস টেপে নির্মিত ‘লিভিং ইন বন্ডেজ’ সিনেমাটি নাইজেরিয়ায় তুমুল ব্যবসা করে। এই একটি সিনেমাই প্রমাণ করে দেয়, গল্প ভালো হলে দর্শক ভিজ্যুয়ালের দিকে খুব একটা নজর দেয় না। এরপর থেকেই কম খরচে, দ্রুত সময়ে স্থানীয় দর্শকদের জন্য সিনেমা বানানোর এক বিপ্লব শুরু হয়।

২০০০ সালের পর থেকে, সিলভারবার্ড গ্রুপের মতো বড় প্রযোজনা সংস্থা এবং সরকারি উদ্যোগে ‘প্রজেক্ট নলিউড’-এর মতো প্রকল্পের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রির আধুনিকায়ন শুরু হয়। ২০০৯ সালে ‘দ্য ফিগারিন’ ছবিটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথম নজর কাড়ে। ২০১৩ সালে নাইজেরিয়া সরকারের ২০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ সুবিধায় নলিউডের অবকাঠামোগত এবং প্রযুক্তিগত ব্যাপক উন্নতি ঘটে।

নলিউডের সাফল্যের মূল কারণ হলো এর গল্প। তারা নাইজেরিয়া এবং আফ্রিকার সাধারণ মানুষের পারিবারিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে, যা দর্শকদের সঙ্গে সহজেই সংযোগ স্থাপন করে।

এই বছর প্রথমবারের মতো কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল শাখা ‘আঁ সার্তে রিগা’-তে মনোনয়ন পায় নাইজেরিয়ার সিনেমা ‘মাই ফাদারস শ্যাডো’। এ ছাড়াও, নেটফ্লিক্স, ডিজনি প্লাসের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও এখন নিয়মিত মুক্তি পাচ্ছে নলিউডের সিনেমা। সম্প্রতি, ‘মাকেম্যাশন’ নামে তাদের প্রথম এআই (AI) নির্মিত সিনেমাও মুক্তি পেয়েছে।

তেল রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল নাইজেরিয়ার অর্থনীতিতে, নলিউড এখন এক অন্যতম বড় শক্তি, যা শুধু বিনোদনই দিচ্ছে না, বিশ্বজুড়ে আফ্রিকান সংস্কৃতির এক নতুন পরিচয়ও তুলে ধরছে।

 বাংলাফ্লো/এইচএম  

 

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0