এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: মুম্বাইয়ের ফোর্ট এলাকার এক পুরোনো ভবনের জরাজীর্ণ অফিস থেকে গত ৬০ বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছিল ভারতের পার্সি সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রাচীন এবং পরিচিত ম্যাগাজিন ‘পারসিয়ানা’। কিন্তু গ্রাহক কমে যাওয়া, তহবিলের অভাব এবং পরিচালনার জন্য নতুন উত্তরসূরি না থাকায়, আগামী অক্টোবর মাসেই চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহাসিক ম্যাগাজিনটি।
১৯৬৪ সালে ড. পেস্টঞ্জি ওয়ার্ডেনের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা এই ম্যাগাজিনটি ছিল বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য খবর, সংযোগ এবং পরিচয়ের এক অন্যতম মাধ্যম। এর বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে তাই শুধু গ্রাহকরাই নন, শোকাহত হয়েছেন অনেকেই।
১৮ বছর বয়সী ছাত্র সুশান্ত সিং বলেন, “এটা যেন এক যুগের শেষ। আমরা মজার ছলে বলতাম, যদি পারসিয়ানা না জানো, তাহলে তুমি ‘সত্যিকারের পারসিয়ান’ নও।”
পাকিস্তান থেকে এক পাঠক লিখেছেন, এটি শুধু একটি প্রকাশনা নয়, এটি ছিল “বিশ্বজুড়ে জোরাস্ত্রিয়ানদের সংযোগের সেতু”।
১৯৭৩ সালে মাত্র এক রুপিতে ম্যাগাজিনটি কিনে নেন এর বর্তমান সম্পাদক, ৮০ বছর বয়সী জেহাঙ্গির প্যাটেল। তিনিই সাদামাটা এই জার্নালটিকে এক সাহসী এবং প্রভাবশালী ম্যাগাজিনে রূপান্তরিত করেন।
তিনি সম্প্রদায়ের ভেতরের নানা সংবেদনশীল বিষয়, যেমন— উচ্চ তালাকের হার, জনসংখ্যা হ্রাস, টাওয়ারস অফ সাইলেন্স— নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতেন। ১৯৮৭ সালে, যখন পার্সি সমাজে ভিন্ন ধর্মে বিয়ে একপ্রকার নিষিদ্ধ ছিল, তখন তিনি আন্তঃধর্মীয় বিবাহের বিজ্ঞাপন ছেপে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন, যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হলেও তিনি পিছিয়ে যাননি।
ম্যাগাজিনটির ১৫ সদস্যের দলটি, যাঁদের অনেকেই এখন ষাট বা সত্তরের কোঠায়, তাঁরা এখন শেষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শেষ দিনটি কেমন হবে, এই প্রশ্নের উত্তরে সম্পাদক জেহাঙ্গির প্যাটেল বলেন, “আমরা হয়তো অফিসে একসঙ্গে লাঞ্চ করব। কেক নেই। কোনো উদযাপন নেই। এটা একটি দুঃখজনক উপলক্ষ।”
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0