বাংলাফ্লো বিনোদন
ঢাকা: নতুন সূর্যের আলোয় যখন গোটা পৃথিবী নবজাগরণের স্বপ্নে বিভোর, তখন অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ হয়ে ধরা দিলো সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রতীতি’র আয়োজিত বর্ষবরণ উৎসব। ‘তোমার দেখায় বিশ্ব দেখি’ শিরোনামে আয়োজিত এই বর্ণাঢ্য সন্ধ্যায় মুখর ছিল বাঙালিয়ানার অনুপম সুর, ছন্দ ও কবিতার প্রতিধ্বনি।
গত রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের সূচনা হয় প্রতীতির শিশু-কিশোর শিল্পীদের গানে। তিনটি হৃদয়ছোঁয়া সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে তারা যেন বাংলার শৈশব, মাটি ও মায়ার গান শোনায় প্রবাসে বেড়ে ওঠা দর্শকদের। তাদের কণ্ঠে ছিল নিষ্পাপ আবেগ, ছিল মাতৃভূমিকে ধারণ করার এক অনাবিল তৃষ্ণা।
এরপর মঞ্চে জায়গা করে নেয় বাংলা গানের কিংবদন্তি পঞ্চকবি—রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল ও রজনীকান্তের কালজয়ী সৃষ্টি। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কণ্ঠে সেই সুরগুলো যেন পেয়েছিল নতুন প্রাণ, নতুন ছন্দ। গানগুলোর মাধুর্যতা আর ভাবগাম্ভীর্যে আবিষ্ট হয়ে পড়েন উপস্থিত শ্রোতারা। অনুষ্ঠানের আরেকটি উল্লেখযোগ্য পর্ব ছিল কবিতা পাঠ। সিরাজুস সালেকিন ও রুমানা সিদ্দিকির আবৃত্তিতে ধ্বনিত হয় দেশপ্রেমের তীব্র আহ্বান। দর্শকের হৃদয়ে ছুঁয়ে যায় বাংলার ধুলো-মাটি, নদী-গ্রাম আর মানুষের চিরচেনা মুখ।
সমাপনী পর্বে গাওয়া হয় দেশাত্মবোধক গান ও ঐতিহাসিক গণসংগীত। গানগুলোর কথা আর সুর যেন মনে করিয়ে দেয়, ‘বাংলা শুধু একটি ভাষা নয়, এটি একটি চেতনা, একটি আত্মপরিচয়।’ ১৯৯৭ সালে লোকসংগীতশিল্পী আব্দুল লতিফের সন্তান সিরাজুস সালেকিন প্রতিষ্ঠা করেন ‘প্রতীতি’। সেই থেকে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সংগঠনটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রবাসী বাঙালিদের মাঝে শুদ্ধ সংস্কৃতির আলো ছড়িয়ে চলেছে নিরলসভাবে।
দর্শকদের অভিমত—‘প্রতীতি’ শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন নয়, এটি এক আত্মিক সংযোগ, যা প্রমাণ করে যে ভালোবাসা আর নিষ্ঠা থাকলে প্রবাসেও মাতৃভূমির ঐতিহ্যকে আপন করে রাখা যায় গভীর শ্রদ্ধা ও গর্বের সঙ্গে।
বাংলাফ্লো/আফি
Comments 0