বাংলাফ্লো ডেস্ক

ঢাকা: “হারিয়ে গেছ অন্ধকারে- পাইনি খুঁজে আর,

আজকে তোমার আমার মাঝে সপ্ত পারাবার!

আজকে তোমার জন্মদিন, স্মরণ-বেলায় নিদ্রাহীন

হাতড়ে ফিরি হারিয়ে যাওয়ার অকূল অন্ধকার!

এই সে হেথাই হারিয়ে গেছে কুড়িয়ে পাওয়া হার!”

— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ‘চৈতি হাওয়া’ 

হারিয়ে গেছেন আমাদের ভানু সিংহ, তবে রেখে গেছেন ৫২টি কাব্যগ্রন্থ ,২ হাজার অবিনাশী গান, ১৩ টি কালজয়ী উপন্যাস, ৯৫ টি ছোটগল্প, ৩৬ টি প্রবন্ধ আর ৩৮ টি নাটক। বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে তার সফল পদচারণ। তাই আমরা তাঁকে খুঁজে পাই গানে, পাই গোধূলির আলোয়, পাই বাংলা ভাষার প্রতিটি সৌন্দর্যে।

আজ ২৫এ বৈশাখ, ভানু সিংহ তথা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ ও বাংলা ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এইদিনে ব্রিটিশ ভারতের কলকাতার জোড়াসাঁকোর সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই নক্ষত্র। বাংলাদেশ ও কোলকাতা দুই বাংলাতেই শ্রদ্ধা, ভক্তির সাথে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয় রবি ঠাকুরের জন্মতিথি।

এ বছর অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর প্রধান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, যেখানে জমিদারি তদারকির কাজে কবিগুরু দীর্ঘসময় কাটিয়েছিলেন।পাশাপাশি, বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান- নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণ ডিহি ও পিঠাভোগেও নানা আয়োজনে দিনটি উদ্‌যাপন করা হবে। এসব স্থানে অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এবারের রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে- ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা সহ সব জেলা শহরে বিশ্বকবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিনদিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ও চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে।

এশিওদের মধ্যে সর্বপ্রথম নোবেল পান তিনি । ১৯১৩ সালে গিতাঞ্জলি কাব্যের জন্য এই পুরস্কারে ভূষিত হন। আজ এই সব্যসাচী কবির জন্মবার্ষিকী তে মনে পরছে তার উদয়ন কাব্যের মর্মস্পর্শী লাইন –

“আমার এ জন্মদিন-মাঝে আমি হারা

আমি চাহি বন্ধুজন যারা

তাহাদের হাতের পরশে

মর্ত্যের অন্তিম প্রীতিরসে

নিয়ে যাব জীবনের চরম প্রসাদ,

নিয়ে যাব মানুষের শেষ আশীর্বাদ।“

বাংলাফ্লো/আফি