এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক

ঢাকা: রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে প্রকাশ্যে পাথর দিয়ে পিটিয়ে হত্যার নৃশংস ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই বর্বরোচিত ঘটনায় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের পাশাপাশি সরব হয়েছেন বিনোদন জগতের ব্যক্তিত্বরাও। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে জোরালোভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রশংসিত নির্মাতা আশফাক নিপুন। তিনি তাঁর ফেসবুক পোস্টে এই হত্যাকাণ্ডকে ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য ‘লিটমাস টেস্ট’ হিসেবে অভিহিত করে এক কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

নির্মাতার ক্ষোভ ও পূর্ণাঙ্গ ফেসবুক পোস্ট: গত শুক্রবার (১১ জুলাই) নির্মাতা আশফাক নিপুন তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। এতে তিনি শুধু হত্যাকাণ্ডেরই নিন্দা জানাননি, বরং দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকেও আঙুল তুলেছেন।

তাঁর ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

চাঁদাবাজি/ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ/পার্সেন্টেজ যেই নাম আর কারণই দেয়া হোক না কেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে প্রকাশ্য দিবালোকে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে যে নৃশংসভাবে হত্যা আর (বুকের আর মাথার উপর বিশাল পাথর ফেলে ফেলে) উলঙ্গ করে রাস্তায় ফেলে মৃতদেহের উপর লাফিয়ে লাফিয়ে উল্লাস করা হল শতশত মানুষের সামনে, এই ভয়াবহ ঘটনা এবং ভিডিও লিটমাস টেস্ট হয়ে থাকল অদূর ভবিষ্যতে ভোটের মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় আসবেন তাদের জন্য।

আপনারা কি এই চাঁদাবাজদের আরো ক্ষমতায়িত করবেন? নাকি সাধারণ মানুষকে ক্ষমতায়িত করবেন? আপনারা কি এই চাঁদাবাজদের সেবা করবেন? নাকি সাধারণ মানুষের সেবা করবেন? আপনারা কি 'সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই, সে যে দলেরই হোক না কেন' বলে আইন এবং বিচারের শাসন নিশ্চিত করবেন? নাকি ঘটনার পর 'অমুক সন্ত্রাসী আমার দলের কেউ না' বলে দায় সারবেন?

আমরা 'রোগী মরিবার পরে ডাক্তার সাহেব আসিলেন' দেখতে চাইনা আর। এই দেশেরই প্রবল প্রতাপশালী সরকার প্রধান, তার পরিবারসহ লেজ তুলে পালাতে বাধ্য হয় যখন সাধারণ মানুষ লাল কার্ড দেখায়। মানুষ যেন আবার লাল কার্ড না দেখায়, সেই ভয়টা রাখেন। সেভাবে কাজ করেন।

সোহাগ হত্যাকারী গ্রেফতারকৃত মহিন আর তার বাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবিলম্বে কার্যকর করা হোক।

আশফাক নিপুনের এই পোস্টটি শুধু একজন শিল্পীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এটি একাধারে একটি সামাজিক ভাষ্য, রাজনৈতিক হুঁশিয়ারি এবং ন্যায়বিচারের জোরালো দাবি। ‘মানুষের লাল কার্ড’-এর মতো শক্তিশালী রূপক ব্যবহার করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, জনতার ক্ষমতাকে অবহেলা করার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।

তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত গ্রেফতারকৃত মহিন ও তার বাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন, যা প্রমাণ করে তিনি শুধু তাত্ত্বিক আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ নন, বরং কার্যকর বিচার দেখতে চান। 

বাংলাফ্লো/এইচএম