এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: দক্ষিণ কোরিয়ার স্বৈরাচারী শাসনের এক অন্ধকার সময়ে, যখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল নিষিদ্ধ, তখন সরকারই জনগণকে ব্যস্ত রাখতে উৎসাহিত করত যৌনতা, খেলাধুলা এবং সিনেমা নিয়ে। সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে, কোরিয়ার প্রথম প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমা ‘মাদাম এমা’ নির্মাণের পেছনের গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছে নেটফ্লিক্সের নতুন ছয় পর্বের সিরিজ ‘এমা’। ২২ আগস্ট মুক্তির পর থেকেই সিরিজটি তাঁর সাহসী গল্প এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনায়।
আশির দশকে কোরিয়ার সামরিক শাসক ছিলেন চুন দু-হুয়ান। গণতন্ত্রকামী আন্দোলন দমন করতে একদিকে যেমন তিনি গুয়াংজু গণহত্যার মতো নির্মম ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, তেমনই অন্যদিকে জনগণকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চালু করেছিলেন তথাকথিত ‘থ্রি-এস’ (3S) নীতি— সেক্স, স্ক্রিন (সিনেমা) আর স্পোর্টস।
এই নীতির আওতাতেই ১৯৮২ সালে নির্মিত হয় কোরিয়ার প্রথম ইরোটিক সিনেমা ‘মাদাম এমা’, যা বক্স অফিসে ইতিহাস তৈরি করে।
নেটফ্লিক্সের ‘এমা’ সিরিজটি সেই সময়েরই এক কাল্পনিক চিত্র তুলে ধরেছে। এর গল্পে রয়েছেন জং হি-রান (হানি লি) নামের এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী, যিনি বারবার যৌন আবেদনময়ী চরিত্রে অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত। তিনি ‘মাদাম এমা’য় নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করতে অস্বীকার করলে, প্রযোজক তাঁর জায়গায় নিয়ে আসেন শিন জু-এ নামের এক উচ্চাভিলাষী নাইট ক্লাব নর্তকীকে। পুরুষশাসিত চলচ্চিত্র জগতে টিকে থাকার জন্য এই দুই নারীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অবশেষে একে অপরের সহযোগী হয়ে ওঠার লড়াই নিয়েই এগিয়েছে সিরিজের গল্প।
সিরিজটির পরিচালক লি হে-ইয়ং বলেন, “আশির দশকে একদিকে যৌনতা উৎসাহিত হচ্ছিল, অন্যদিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রায় ছিল না। আজকের দৃষ্টিতে সেই বৈপরীত্য আবার তুলে ধরতে চেয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “যত বেশি ঝলমলে দৃশ্যপট, তত স্পষ্ট হয় যে যুগটা ছিল শোষণ আর দমন-পীড়নের। সেই দ্বৈত সত্যই ‘এমা’কে তৈরি করেছে।”
যদিও সিরিজের কিছু অংশ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তবে বেশিরভাগ সমালোচকই ‘এমা’র নির্মাণশৈলী, অভিনয় এবং এক জটিল সময়কে পর্দায় তুলে ধরার সাহসের প্রশংসা করেছেন।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0