এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: তিনি সৌন্দর্য, নাচ এবং অভিনয়ের এক অপূর্ব সমন্বয়। যিনি একাই হিন্দি, তামিল ও তেলেগু— এই তিন চলচ্চিত্র শিল্প শাসন করেছেন এবং ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে প্রথম প্রকৃত ‘নারী সুপারস্টার’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তিনি কিংবদন্তি অভিনেত্রী বৈজয়ন্তীমালা। খ্যাতির শীর্ষে থাকা অবস্থাতেই তিনি রুপালি পর্দা ছেড়ে সংসারে মন দিয়েছিলেন, যা আজও অনেককে বিস্মিত করে।
বৈজয়ন্তীমালার প্রতিভা শৈশবেই বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছিল। ১৯৪০ সালে, মাত্র সাত বছর বয়সে, তিনি ভ্যাটিকান সিটিতে পোপ পায়াস দ্বাদশের সামনে শাস্ত্রীয় নৃত্য (ভরতনাট্যম) পরিবেশন করার মতো এক বিরল সম্মান অর্জন করেন।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে, ১৯৪৯ সালে, পরিচালক এম ভি রমন তাঁকে চেন্নাইয়ের এক অনুষ্ঠানে নাচতে দেখে তামিল ছবি ‘ভাজকাই’-এর জন্য নির্বাচিত করেন। ছবিটি মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই বক্স অফিসে ঝড় তোলে। পরে এর হিন্দি সংস্করণ ‘বাহার’ এবং তেলেগু সংস্করণও রেকর্ড সাফল্য পায়, যা কিশোরী বৈজয়ন্তীমালাকে রাতারাতি তারকা বানিয়ে দেয়।
এরপর ‘নাগিন’, ‘দেবদাস’, ‘নয়া দৌড়’, ‘সাধনা’, ‘আম্রপালি’-এর মতো একের পর এক সুপারহিট সিনেমা তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। তিনি ছিলেন সেই বিরল অভিনেত্রীদের একজন, যিনি একসঙ্গে তিনটি ইন্ডাস্ট্রিতেই একচ্ছত্র নায়িকা হিসেবে রাজত্ব করেছেন। তিনিই হেমা মালিনী, জয়াপ্রদা এবং শ্রীদেবীর মতো দক্ষিণি নায়িকাদের বলিউডে সফল হওয়ার পথ দেখিয়েছিলেন।
দিলীপ কুমারের সঙ্গে তাঁর জুটি ছিল পর্দায় অপ্রতিরোধ্য, যা বাস্তবেও প্রেমের গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছিল। ষাটের দশকে রাজ কাপুরের সঙ্গেও তাঁর নাম জড়ায়। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি বিয়ে করেন রাজ কাপুর পরিবারের চিকিৎসক, ড. চমনলাল বালিকে। জানা যায়, বৈজয়ন্তীমালার প্রেমে পড়েই চমনলাল তাঁর প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন।
১৯৬৮ সালে বিয়ের পরই, ক্যারিয়ারের একেবারে শীর্ষে থাকা অবস্থায়, বৈজয়ন্তীমালা অভিনয় জগৎ থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ১৯৭০ সালের পর তাঁকে আর নতুন কোনো ছবিতে দেখা যায়নি।
খ্যাতির চূড়া থেকে স্বেচ্ছায় সরে এলেও, ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে বৈজয়ন্তীমালার নাম এক কিংবদন্তি হিসেবেই লেখা থাকবে, যাঁর ঝলক আজও অমলিন।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0