বাংলাফ্লো ডেস্ক
ঢাকাঃ বড় কোনো দুর্ঘটনা, যেমন গাড়ি দুর্ঘটনা, অগ্নিকাণ্ড, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সহিংসতা বা হঠাৎ প্রাণঘাতী ঘটনা ব্যক্তির উপর গভীর মানসিক প্রভাব ফেলতে পারে। এই মানসিক প্রতিক্রিয়াকে বলা হয় ট্রমা অনেক সময় এটি থেকে পিটিএসডি (পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার)-এর মতো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি হতে পারে।
ট্রমা হলো কোনো ভয়াবহ, জীবনহানিকর, বা মানসিকভাবে বিধ্বংসী ঘটনার পর মানসিক, আবেগগত ও শারীরিক প্রতিক্রিয়া। অনেকেই আছেন দীর্ঘদিন, কিংবা সারাজীবনেও এই ট্রমা ভুলতে পারেন না। এতে মানসিক সমস্যার পাশাপাশি দেখা দেয় শারীরিক নানান সমস্যা। তবে সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই মানসিক ট্রমা ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
ট্রমার সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- দুঃস্বপ্ন, ফ্ল্যাশব্যাক, আতঙ্ক, দুশ্চিন্তা, মনোযোগে ঘাটতি, মানসিক অবসাদ, ঘুমের সমস্যা, রাগ, বিরক্তি, বা খিটখিটে বোধ করা, জনসমক্ষে ভয় লাগা বা নিজেকে গুটিয়ে ফেলা, অপরাধবোধ বা নিজের ওপর রাগ, বিরক্তিকর স্মৃতি,স্মৃতিভ্রম, মাঝে মাঝে প্যানিক অ্যাটাক, পূর্বের প্রতিক্রিয়া ফিরিয়ে আনে এমন স্থান বা মানুষ এড়িয়ে চলা, পরিবার এবং বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া।
এছাড়া শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়া। যেমন-মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা এবং হজমের সমস্যা, অনেক বেশি ঘুমানো বা ঘুম না হওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ঘাম হওয়া ইত্যাদি।
ট্রমা মোকাবেলায় কী করতে পারেন তার কিছু উপায় জেনে নিন-
১. ঘটনার পর নিজেকে সময় দিন
ট্রমার পরপরই স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের অনুভূতিগুলো মেনে নিন। নিজেকে বলুন, আমি যা অনুভব করছি তা স্বাভাবিক।
২. কথা বলুন, গোপন রাখবেন না
ঘনিষ্ঠ বন্ধু, পরিবারের সদস্য অথবা কাউন্সেলরের সঙ্গে কথা বলুন। নিজের ভয়, রাগ বা কষ্ট প্রকাশ করলেই চাপ কমে।
৩. রুটিনে ফিরে আসুন ধীরে ধীরে
প্রতিদিনের কাজগুলো আবার শুরু করুন ঘুম, খাওয়া, কাজ। ব্যস্ততা আপনাকে কিছুটা মানসিক ভারসাম্য ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করবে।
৪. শরীরচর্চা ও মেডিটেশন
হাঁটাহাঁটি, যোগব্যায়াম বা ব্যায়াম করলে মানসিক চাপ কমে। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ও ধ্যান ট্রমা নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ করে।
৫. মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন
যদি লক্ষণ ৪ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা খারাপ হয়, তাহলে সাইকোলজিস্ট বা সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে যান। ট্রমা ফোকাসড থেরাপি খুবই কার্যকর।
৭. ক্রিয়েটিভ এক্সপ্রেশন চেষ্টা করুন
লিখুন, আঁকুন বা গান শুনুন। এ ধরনের সৃজনশীল কাজ আপনার আবেগ প্রকাশে সাহায্য করে। ফলে আপনার ট্রমা ভুলতে সাহায্য করতে পারে।
৮. সাপোর্ট গ্রুপে যোগ দিন
যারা একইরকম ট্রমার ভুক্তভোগী, তাদের সঙ্গে কথা বললে আপনি একা নন তা অনুভব করতে পারবেন। বিশ্রাম নিন। একা থাকবেন না। অন্যদের সঙ্গে কথা বললেও ওই চিন্তা থেকে বের হতে পারবেন সহজেই।
বাংলাফ্লো/এফএ
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0