মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নুরাল পাগলার ঘটনায় আদালতে ৮ আসামির দোষ স্বীকার

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মুফতি আব্দুল লতিফ নামে একজন ইমামকে নুরাল পাগলার মরদেহ উত্তোলনের অন্যতম নির্দেশদাতা হিসেবে এবং নজরুল ইসলাম নজির নামে আরেকজনকে মরদেহে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরাতে সহায়তাকারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

ছবি-সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ‘নুরাল পাগলা’র দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং কবর থেকে মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়াবহ তাণ্ডবের ঘটনায়, দুটি মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ২৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজন মসজিদের ইমাম এবং স্থানীয় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাও রয়েছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৮ জন ইতোমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. শরীফ-আল-রাজীব সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১৬ জন এবং দরবারের ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় ৮ জনসহ মোট ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মুফতি আব্দুল লতিফ নামে একজন ইমামকে নুরাল পাগলার মরদেহ উত্তোলনের অন্যতম নির্দেশদাতা হিসেবে এবং নজরুল ইসলাম নজির নামে আরেকজনকে মরদেহে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরাতে সহায়তাকারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, “গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের দরবারে হামলা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরা প্রশাসন থেকে সমাধানের জন্য আন্তরিক ছিলাম এবং উভয় পক্ষকে নিয়ে কয়েক দফা মিটিংও করেছিলাম।” তিনি জানান, আলেম সমাজের তিনটি দাবির মধ্যে দুটি পূরণ হওয়ার পরও, তাঁরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আশ্বাস দিয়েও পরে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েন।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “সুনির্দিষ্ট তথ্য, ভিডিও ফুটেজ ও প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধের সাথে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। মামলা নিয়ে তদন্ত কাজে কেউ প্রভাব বিস্তার বা অনৈতিক তদবির করলে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।”

গত ৫ সেপ্টেম্বর, ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’র ডাকা এক সমাবেশ থেকে ‘নুরাল পাগলা’র দরবারে হামলা চালানো হয়। সেই সহিংসতায় রাসেল মোল্লা নামে এক ভক্ত নিহত হন, পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় এবং কবর থেকে নুরাল পাগলার মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় পুলিশ এবং নিহতের বাবা বাদী হয়ে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেন, যেখানে হাজার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

বাংলাফ্লো/এইচএম 

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0