Logo

লাঙ্গলবন্দে পুণ্যস্নান আজ, প্রস্তুতি সম্পন্ন, নিরাপত্তায় থাকছে সেনাবাহিনী

লাঙ্গলবন্দের পুণ্যস্নানে এবার সেনাবাহিনীও মোতায়েন থাকবে।

পুলিশ সুপারসহ লাঙ্গলবন্দ পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক। ছবি: সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ: জেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে আজ (শুক্রবার, ৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী পুণ্যস্নান।

দুই দিনব্যাপী এই উৎসব চলবে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত ২টা থেকে শুরু হয়ে ৫ এপ্রিল রাত ১২টা ৪৫ পর্যন্ত।

স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠবে দেশ-বিদেশ থেকে আসা লাখো পূণ্যার্থী।

এবার মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেছেন নারায়ণগঞ্জ প্রশাসন। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিয়মিত লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, এবার স্নানোৎসব আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করতে আমি নিজে জেলার পুলিশ সুপারসহ তিনবার লাঙ্গলবন্দে এসেছিলাম সর্বশেষ প্রস্তুতি দেখতে।

বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রথমবারের মতো এবারের স্নানোৎসবে ড্রোন থাকবে। এ ছাড়া, এবার আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীও মোতায়েন থাকবে। পূণ্যার্থীদের সুবিধার্থে ম্যাপ টানিয়ে দেওয়া হবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হচ্ছে মহাষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব। আশা করি এবার স্নানোৎসব আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করতে পারবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাইরে থেকে আসা বিদেশি পূণ্যার্থীদের ব্যাপারে আলাদা করে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে।

লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা ননী গোপাল সাহা বলেন, এবারের মতো এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগে কখনো দেখিনি। জেলা প্রশাসক প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা নিজে হেঁটে প্রতিটি ঘাটের সর্বশেষ প্রস্তুতি দেখেছেন। এর আগেও তিনি দু’বার এসেছেন লাঙ্গলবন্দে এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পি বলেন, শুধু নিরাপত্তার বিষয় নয়, একজন পুলিশ সদস্যের খাওয়া দাওয়ার বিষয়টিও জেলা প্রশাসক নিজে তদারকি করছেন। আমি শুনেছি তিনি তার চার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও ১০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সার্বক্ষণিকভাবে লাঙ্গলবন্দে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বেশি জোরদার করা হয়েছে। জায়গায় জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকবে। এবার মেজর আফসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ সদস্যও মোতায়েন থাকবে।

স্নানোৎসবকে কেন্দ্র সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তার জন্য ১৪৪২ জন পুলিশ, ৪৭১ জন আনসার, নৌ-পুলিশ ৬৪ জনসহ কোস্টগার্ড ও হাইওয়ে পুলিশের একটি করে টিম দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিন মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরিতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পূণ্যার্থীরা এবার ২০টি ঘাটে স্নানে অংশ নেবেন। লগ্ন শুরুর পর পরই পূণ্যার্থীর ঢল নামবে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। পাপমোচনের বাসনায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পূণ্যার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠবে লাঙ্গলবন্দ।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের স্নান উৎসবে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে সাতটি ওয়াচ টাওয়ার, ৭০টির অধিক সিসি টিভি ক্যামেরা।

এ ছাড়াও থাকবে সাতটি মেডিকেল ক্যাম্প। আর ১০টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য। এর বাইরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাসহ সব জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান স্নান উৎসব চলাকালীন প্রস্তুত থাকবে। সেই সঙ্গে থাকবে স্বেচ্ছাসেবী কর্মী।

বাংলাফ্লো/এসবি

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0