বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাজীপুরে ম্যানহোলে পড়ে নারী নিখোঁজ: ৩৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার মরদেহ

গাজীপুরের টঙ্গীতে উন্মুক্ত ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ হওয়া ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির (২৮) মরদেহ অবশেষে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিখোঁজের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টঙ্গীর শালিকচুড়া বিলের কচুরিপানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ছবিঃ সংগৃহীত


বাংলাফ্লো জেলা প্রতিনিধি,

গাজীপুর: গাজীপুরের টঙ্গীতে উন্মুক্ত ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ হওয়া ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির (২৮) মরদেহ অবশেষে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিখোঁজের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টঙ্গীর শালিকচুড়া বিলের কচুরিপানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম জানান, “ঘটনার দিন বৃষ্টির পানি প্রবল স্রোতের সঙ্গে ম্যানহোল থেকে শালিকচুড়া বিলে গিয়ে পড়ে। সেখানেই আমরা উদ্ধার অভিযানে তার মরদেহ খুঁজে পাই।”

এর আগে রোববার (২৮ জুলাই) রাত ৯টার পর ফারিয়া অফিসের কাজ শেষে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে হাঁটার সময় সড়কে জমে থাকা পানির নিচে থাকা খোলা ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ হন। ওই সময় প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ম্যানহোলটি দেখা যাচ্ছিল না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ম্যানহোলটি উন্মুক্ত ছিল। সেখানে কোনো স্লাব বসানো হয়নি, এমনকি ছিল না কোনো সতর্কতামূলক চিহ্ন। স্থানীয়রা উদ্ধার চেষ্টা চালালেও পানির গভীরতা ও স্রোতের কারণে ব্যর্থ হন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

নিহত ফারিয়া তাসনিম জ্যোতি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়ার বাসিন্দা, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার মরহুম মুন্সি ওয়ালিউল্লাহ বাবলুর মেয়ে। তিনি রাজধানীর মিরপুরে বসবাস করতেন এবং নিকুঞ্জ এলাকার একটি ওষুধ কোম্পানিতে ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর যমজ দুই সন্তান আরিয়ান ও আয়ানকে নিয়ে একাই সংসার চালিয়ে আসছিলেন।

ফারিয়ার ভাই শোভন জানান, “রোববার রাত থেকে তার ফোন বন্ধ ছিল। সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার পড়ে থাকা জুতা দেখে আমরা নিশ্চিত হই, সে ওই ম্যানহোলে পড়ে গেছে।”

মঙ্গলবার সকালে মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিজ বাড়িতে পৌঁছালে শোক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। রাত ১০টার দিকে জানাজার নামাজ শেষে চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন জামে মসজিদের পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

তবে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছিল তার যমজ সন্তানদের কান্না। মা হারানোর শোক তারা কিছুতেই সহ্য করতে পারছে না। বারবার মায়ের নাম ধরে ডেকেছে, কোল খুঁজেছে, কাঁদছে থামছেই না—এই দৃশ্য দেখে শোকাহত হয়ে পড়ে উপস্থিত সবাই।

স্থানীয়রা জানান, জ্যোতির এই মর্মান্তিক মৃত্যু শুধুই একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, এটি জননিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ। তারা অবিলম্বে সড়কপথ ও জনসুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

বাংলাফ্লো/সিএস

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0