আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ঢাকা: জাপানে একটি গুরুত্বপূর্ণ উচ্চকক্ষ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। রবিবার (২০ জুলাই) সকালে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। শেষ হবে স্থানীয় সময় রাত ৮টায়। এরপর গণমাধ্যমগুলো এক্সিট পোলের ভিত্তিতে ফলাফলের পূর্বাভাস দেবে। এই ভোটকে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার ক্ষমতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মতামত জরিপে দেখা গেছে, ইশবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও তার জোটসঙ্গী কোমেইতো সংসদের উচ্চকক্ষের ২৪৮টি আসনের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় ৫০টি আসন পেতে ব্যর্থ হতে পারে। এই নির্বাচনে অর্ধেক আসনের জন্য ভোট হচ্ছে।
জরিপে আরও দেখা গেছে, ছোট ছোট বিরোধী দলগুলো যারা কর হ্রাস এবং জনসেবা খাতে ব্যয় বাড়ানোর পক্ষপাতী, তারা আসন সংখ্যা বাড়াতে পারে। তাদের মধ্যে আছে ডানপন্থি দল সানসেইতো। এই দলটি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি মূলধনের প্রবাহের বিরোধিতা এবং লিঙ্গ সমতা সংক্রান্ত পদক্ষেপ ফিরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জোটের দুর্বল ফলাফল বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নাড়িয়ে দিতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আলোচনা ব্যাহত করতে পারে।
জাপানে এশিয়া গ্রুপের সহযোগী রিনতারো নিশিমুরা বলেন, “ইশিবার হয় নতুন এলডিপি নেতা নির্বাচনের পথ তৈরি করতে হবে। অথবা কিছু বিরোধী দলের সমর্থন পেতে নীতিগত আপসের দিকে যেতে হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেকটি পরিস্থিতিতে এলডিপি ও কোমেইতোকে কিছু না কিছু ছাড় দিতে হবে। বিষয়টি কঠিন হবে। কারণ সম্ভাব্য মিত্ররা দর কষাকষিতে প্রভাব খাটাতে পারবে।”
নির্বাচনের পর জাপানের সামনে ১ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর সময়সীমা রয়েছে, তা না হলে দেশটি তাদের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজারে কঠোর শুল্কের মুখে পড়বে।
এই ধরনের আমদানি শুল্ক জাপানের অর্থনীতিকে চাপে ফেলতে পারে। এমনিতেই মুদ্রাস্ফীতিতে বিপর্যস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ওপর সরকারের ওপর আরও চাপ তৈরি করবে। বিশেষ করে গত বছরের তুলনায় চালের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় পরিবারগুলো আরও সমস্যায় পড়বে।
গত অক্টোবরে ইশবার প্রশাসন ক্ষমতাশালী নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছিল। সেটি ছিল এলডিপির গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স, যা আর্থিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছিল এবং প্রধানমন্ত্রীকে অনাস্থা প্রস্তাবের মুখে ফেলে দিয়েছিল, যা তার প্রশাসন পতন ও নতুন সাধারণ নির্বাচনের সূচনা করতে পারে।
যদিও যুদ্ধ-পরবর্তী সময় থেকে জাপানে বেশিরভাগ সময়ই এলডিপি ক্ষমতায় রয়েছে। তারপরও দেশটি এখন পর্যন্ত অন্যান্য শিল্পোন্নত গণতান্ত্রিক দেশের মতো রাজনৈতিক বিভাজন ও সামাজিক দ্বিধাবিভক্তি এড়াতে পেরেছে।
তথ্যসূত্রঃরয়টার্স
বাংলাফ্লো/এফএ
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0