শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

থারুরের মন্তব্যের জবাব মেঘমল্লার বসুর

শশী থারুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের ব্যাপক বিজয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য এক অশনি সংকেত।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: ভারতের কংগ্রেস দলের এমপি শশী থারুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের ব্যাপক বিজয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে। তার এই উদ্বেগ প্রকাশের জবাব দিয়েছেন ডাকসুর প্রতিরোধ পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়াই করা প্রার্থী মেঘমল্লার বসু। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি নিজের ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানান।

পোস্টে মেঘমল্লার লিখেন, ড. শশী থারুরের বক্তব্য মূলত বাংলাদেশের ডানপন্থী রাজনীতিকদেরই সহায়তা করছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় সংস্থার সম্পৃক্ততা, ক্রমবর্ধমান ইসলামোফ্যাসিস্ট প্রবণতা এবং শক্তি ও অর্থের বৈষম্য সত্ত্বেও তিনি নির্বাচনে প্রায় পাঁচ হাজার ভোট পেয়েছেন। এটি প্রমাণ করে যে, প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদেরও শক্ত অবস্থান রয়েছে।

মেঘমল্লার থারুরকে উদ্দেশ করে বলেন, দয়া করে বাংলাদেশের ডানপন্থী রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করবেন না। যদিও আপনার পর্যবেক্ষণ যে মানুষ দুই প্রধান দলের দুর্নীতিতে ক্লান্ত হয়ে বিকল্প খুঁজছে—এটি সঠিক, কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না আপনার মন্তব্য আসলে বাংলাদেশের অতি-ডানদেরই সাহায্য করছে।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিজয়কে থারুর কেন উদ্বেগজনক মনে করছেন, অথচ নিজ দেশে সাবরিমালা মন্দির ইস্যুতে কট্টর ডানদের হয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। মেঘ লিখেন, যারা মোদি ও অমিত শাহকে টানা তিনবার হারাতে ব্যর্থ, তাদের উচিত নয় অন্য দেশের এক ছাত্রসংগঠনের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে মাথা ঘামানো।

মেঘমল্লার আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা ইতিমধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি লেখেন, আমাদের নিজেদের চরকায় আমরা নিজেরাই তেল দেব। আশা করি, ভারতের মানুষ অবশেষে ভোটে হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের হারাতে পারবে। আর আমরা আমাদের দেশে ইসলামোফ্যাসিস্টদের প্রতিরোধ করতে প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।

এর আগে শশী থারুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের ব্যাপক বিজয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য এক অশনি সংকেত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে থারুর লিখেন, এটি হয়তো বেশিরভাগ ভারতীয়র কাছে খুব একটা আলোড়ন সৃষ্টি করেনি, কিন্তু এটি ভবিষ্যতের জন্য এক উদ্বেগজনক ইঙ্গিত।

থারুর লিখেন, বাংলাদেশে এখন দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) এবং বিএনপি— উভয়ের প্রতিই মানুষের বিরক্তি বেড়েছে। অনেকেই ‘উভয়ের সর্বনাশ হোক’ মনোভাব থেকে জামায়াতের দিকে ঝুঁকছে। তারা জামায়াতকে বেছে নিচ্ছে না ধর্মীয় উগ্রতার কারণে, বরং এজন্য যে দলটি, সঠিক হোক বা ভুল, দুই মূল ধারার দলের মতো দুর্নীতি ও কুশাসনে কলঙ্কিত নয়।

শশী থারুর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রতিফলিত হবে? ভারতকে কি তখন প্রতিবেশী হিসেবে জামায়াত সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে?

বাংলাফ্লো/সিএস


Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0