আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ঢাকা: ইসরায়েলের গোয়ার্তুমির জন্য চলমান শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে উঠছে বলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস অভিযোগ করেছে। তবে এরমধ্যেও মার্কিন সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের আওতায় ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে তারা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই ) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি জানায়, এবারের আলোচনায় ত্রাণ প্রদান, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তার মতো বেশকিছু মতপার্থক্যের জায়গা রয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে সম্প্রতি নতুন একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেটা যাচাই করে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের কাছে ইতিবাচক সাড়া প্রদান করেছে হামাস। তারা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির কাঠামো প্রয়োগের বিস্তারিত সমঝোতার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনায় বসতে হামাস প্রস্তুত আছে।
এবারের প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালায় হামাস। ওইদিন অন্তত ১২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয় বলে দাবি করে আসছে নেতানিয়াহু সরকার। এই হামলার জবাবে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৫৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, গাজায় হামাসের সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রাথমিক শর্তে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। এই সাময়িক বিরতির সময় যুদ্ধ পুরোপুরি অবসান নিশ্চিতে কাজ করবে সংশ্লিষ্ট পক্ষরা।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের প্রস্তুতি তাদের দিকে প্রায় চূড়ান্ত। একাধিক সূত্র দাবি করেছিল, শুক্রবারের মধ্যে হামাস ইতিবাচক সাড়া দিলে ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেবেন।
পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক কর্মকর্তা বলেছেন, ১০ জন জিম্মি এবং ১৮ জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিষয়টি প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত আছে। হামাসের হাতে এখনও অর্ধশত জিম্মি আছে বলে জানা গেছে, যার মধ্যে জনা বিশেক জীবিত আছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েল।
ওই ব্যক্তির বরাতে জানা যায়, প্রস্তাবে আরও রয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলে তাৎক্ষণিকভাবে গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারও শুরু করা হবে। স্থায়ী যুদ্ধাবসানের বিষয়েও এই সময়ের মধ্যে আলোচনা শুরুর পরিকল্পনা রাখা হয়েছে প্রস্তাবে।
প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে প্রয়োজনে সময়সীমা বৃদ্ধি হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ও হামাসের বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে গেছে। হামাসের পুরো নির্মূল এবং তাদের অস্ত্রত্যাগ নিশ্চিত না হলে যুদ্ধ থামাতে চায় না ইসরায়েল। আর ইসরায়েলি সেনা গাজা থেকে পুরো প্রত্যাহার ছাড়া আলোচনা হবে না বলে গোঁ ধরে আছে হামাস।
বাংলাফ্লো/আফি
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0