এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: পঞ্চাশের দশকে ফিল্মফেয়ার সাময়িকী তাঁকে ‘সবচেয়ে সুন্দরী বলিউড অভিনেত্রী’র তকমা দিয়েছিল। তাঁর সৌন্দর্য এবং অভিনয়ে মুগ্ধ ছিল গোটা ভারত। দিলীপ কুমারের মতো কিংবদন্তিও তাঁকে ‘সেরাদের সেরা’ বলে প্রশংসা করতেন। তিনি নলিনী জয়বন্ত। ৭০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করে যিনি একসময় খ্যাতি, নাম, যশ— সবকিছু পেয়েছিলেন, তাঁর শেষ জীবন কেটেছে চরম একাকীত্বে এবং তাঁর মৃত্যু হয়েছিল অত্যন্ত করুণভাবে।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ১৯৪১ সালে, ‘রাধিকা’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় জগতে পা রাখেন নলিনী জয়বন্ত। প্রযোজক চিমনলাল দেশাই তাঁর প্রতিভা প্রথম আবিষ্কার করেন। এরপর ‘সমাধি’, ‘নাস্তিক’, ‘মুনিমজি’, ‘হাম সব চোর হ্যাঁ’, ‘কালা পানি’-র মতো একের পর এক হিট সিনেমায় অভিনয় করে তিনি পঞ্চাশের দশকের অন্যতম শীর্ষ নায়িকা হয়ে ওঠেন। অনেকেই মনে করেন, প্রতিভা এবং সৌন্দর্যে তিনি তাঁর সমসাময়িক মধুবালার চেয়েও এগিয়ে ছিলেন।
পেশাগত জীবনে যতটা সফল ছিলেন, ব্যক্তিগত জীবনে ততটাই ঝড়ের মধ্যে দিয়ে গেছেন নলিনী। তিনি প্রথমে বিয়ে করেছিলেন পরিচালক বীরেন্দ্র দেশাইকে। সেই সম্পর্ক বিচ্ছেদে পরিণত হওয়ার পর, তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন অভিনেতা প্রভু দয়ালকে। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই প্রভু দয়াল মারা যান, যা নলিনীকে পুরোপুরি একা এবং বিধ্বস্ত করে দেয়।
দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যুর পর, নলিনী জয়বন্ত সমাজ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। তিনি বাড়ি থেকে বের হতেন না, কারও সঙ্গে মিশতেন না। এই চরম নিঃসঙ্গতার মধ্যেই ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয় হলো, তাঁর মৃত্যুর খবরও কেউ জানতে পারেনি। তিন দিন পর পুলিশ তাঁর বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে এবং সেই সময় তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যও পাশে ছিলেন না।
বলিউডের আলোঝলমলে জগতের আড়ালে যে কতটা অন্ধকার এবং একাকীত্ব থাকতে পারে, নলিনী জয়বন্তের জীবন যেন তারই এক করুণ প্রতিচ্ছবি।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0