বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: বাংলাদেশে নতুন করে চার শিশুর শরীরে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (বার্ড ফ্লু) ধরা পড়েছে। শনাক্ত হওয়া শিশুদের বয়স এক থেকে আট বছরের মধ্যে। তবে বর্তমানে চিকিৎসা নিয়ে তারা সুস্থ আছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর)।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিরোধ জোরদারে সরকার ইতোমধ্যে গবেষণা কৌশল প্রণয়ন করেছে। এ বিষয়ে গত বুধবার আইসিডিডিআর,বি, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক হয়। বৈঠকে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার বর্তমান পরিস্থিতি, জাতীয় গবেষণা কৌশল চূড়ান্তকরণ ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সভার আলোচনায় সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকির কারণ চিহ্নিতকরণ, ভাইরাস-হোস্ট সম্পর্ক, প্রাণী-মানব সংযোগ এবং টিকার কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য আরও শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়।
এছাড়া জানানো হয়, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শুধু নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের সমস্যা নয়; ২০২৫ সালে এটি আবারও মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে এবং ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ ধরা পড়ছে। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আটটি দেশের মোট ৩০ জন মানুষের মধ্যে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪ জন কম্বোডিয়ায় এবং বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে চারজন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৩ সাল থেকে দেশে এ পর্যন্ত ১২ জন মানুষের মধ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭ জনই পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। শুধু ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসেই শনাক্ত হয়েছে চারজন, যারা সবাই শিশু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শিশুদের মধ্যে বার্ড ফ্লু আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।
আইসিডিডিআর,বির গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা ও গাজীপুরের জীবিত হাঁস-মুরগির বাজার থেকে সংগ্রহ করা বাতাসের ৯১ শতাংশ নমুনা এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ। এসব বাজারকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে এসব বাজারে মৃত মুরগির প্রায় অর্ধেকই ছিল এইচফাইভ সাবটাইপে আক্রান্ত।
একটি সিস্টেমেটিক রিভিউতে আরও উঠে এসেছে, পোলট্রি খাতে বার্ড ফ্লু বিস্তারের বড় কারণ হচ্ছে দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থা। অসুস্থ পাখিকে আলাদা না রাখা, বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা এবং খামারে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানা—এগুলোকে ঝুঁকি বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0