আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ঢাকা: যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ভিড়ের মধ্যে একটি ত্রাণবাহী ট্রাক উল্টে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, সেনা চাপের মুখে ট্রাকটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় যেতে বাধ্য হয়, যেখানে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। তবে সঠিক স্থান এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এছাড়া, বুধবার (৬ আগস্ট) ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক হামলায় গাজা জুড়ে আরও অন্তত ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
দক্ষিণ গাজার রাফাহতে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষমাণ অবস্থায় ইসরায়েলি গুলিতে পাঁচজন প্রাণ হারান। মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে এক বিমান হামলায় একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হন এবং আহত হন কমপক্ষে ২০ জন। গাজা শহরে ড্রোন হামলায় ছয় মাস বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে, যেটি একটি ত্রাণশিবিরে অবস্থান করছিল। একই শহরের দুটি বাড়িতে হামলায় নিহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় একটি আশ্রয়শিবিরে গুলিবর্ষণে আরও পাঁচজন মারা যান।
আনাদোলুর তথ্যমতে, গত ১৮ বছর ধরে গাজা অবরোধের মধ্যে থাকলেও ২০২৫ সালের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়, যার ফলে খাদ্য, ওষুধসহ মানবিক ত্রাণ প্রবেশে চরম বাধা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সেখানে বসবাসকারী ২৪ লাখ মানুষের জীবন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
গাজার সরকারি হিসাব বলছে, ২৭ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যেখানে দৈনিক প্রয়োজন প্রায় ৬ হাজার ট্রাক।
ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান বলছে, ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র-চালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে নিহত হয়েছেন অন্তত ১,৫৬৮ জন, আহত হয়েছেন আরও ১১,২৩০ জন।
গাজার স্থানীয় প্রশাসন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে “ক্ষুধা ও বিশৃঙ্খলা তৈরির” জন্য দায়ী করেছে। তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে নিরাপত্তাহীন ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় ত্রাণ নিতে মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ। যুদ্ধের ফলে গোটা গাজা ভূখণ্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0