বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশি ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে কাজের অনুমতি: যা বলছে মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী

তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ফেডারেল সরকার ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে মালয়েশিয়ায় কাজ করার অনুমতি দেয়নি।

সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মালয়েশিয়ার উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী জাম্ব্রির সাক্ষাতের ছবি।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

ঢাকা: মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ড. জাম্ব্রি আবদ কাদির কেদাহ রাজ্যের এক্সকো সদস্যের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ফেডারেল সরকার ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে মালয়েশিয়ায় কাজ করার অনুমতি দেয়নি।

উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার দেশটির কেদাহ রাজ্য পরিষদের শিল্প ও বিনিয়োগ, উচ্চশিক্ষা এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন কমিটির প্রধান হাইম হিলমান আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি মাসের শুরুতে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

তিনি দাবি করেন, উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী জাম্ব্রি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রস্তাবটি বিবেচনা করছেন এবং তিনি এটি গ্রহণ করতে পারেন।

হিলমান আবদুল্লাহর এই দাবিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে ড. জাম্ব্রি বলেন, ‘ড. ইউনুসের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় ভর্তি হওয়া ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে এখানে থাকার এবং কাজের সুযোগ দেওয়ার মতো কোনও কথা বা চুক্তি হয়নি এবং আমি কখনও বলিনি যে আমি এই ধরনের প্রস্তাবে রাজি। কারণ শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, বিষয়টি অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কিত।’

এক বিবৃতিতে ড. জাম্ব্রি বলেন, কেদাহ রাজ্যের শিল্প ও বিনিয়োগ, উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন কমিটির চেয়ারম্যান ড. হাইম হিলমান আবদুল্লাহকে এ ধরনের দাবি করার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া উচিত।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ড. জাম্ব্রিকে বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য গ্র্যাজুয়েট পাস অনুমোদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

তবে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী এ অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুল আখ্যা দিয়ে বলেন, হাইমের এই দাবি যে জনগণ এ কারণে অস্বস্তিতে রয়েছে, তা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরকালে এ ধরনের কোনো সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি।

ড. জাম্ব্রি বলেন, একজন একাডেমিক হিসেবে হাইমের উচিত ছিল কেবল সত্য ও প্রমাণভিত্তিক তথ্য উপস্থাপন করা, অনুমান কিংবা ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া নয়।

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, একাডেমিক নীতির দাবি হলো তথ্য সঠিক ও সত্য হওয়া।

উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আরও সতর্ক করে বলেন, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল কনটেন্ট তৈরি করার এই সংস্কৃতি এখনই বন্ধ করতে হবে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য ‘গ্র্যাজুয়েট প্লাস’ ভিসা অনুমোদনের অভিযোগ করেছেন হাইম।

ড. জাম্ব্রি বলেন, একজন একাডেমিক হিসেবে (যিনি ইউনিভার্সিটি উতারা মালয়েশিয়া (ইউইউএম)-এর উপাচার্য ছিলেন) হাইমের উচিত ছিল যাচাইকৃত তথ্যের ভিত্তিতে বিবৃতি দেওয়া, অনুমান কিংবা ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া নয়।

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, একাডেমিক নীতির দাবি হলো তথ্য সঠিক ও সত্য হওয়া। মিথ্যা তথ্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার জন্য ‘বিষয়বস্তু’ তৈরির অভ্যাস অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।

প্রসঙ্গত, টিকটকের একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, হাইম রাজ্য বিধানসভায় বলছেন: এই ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত নয় কারণ দেশে ১৯ লাখ মানুষ আংশিক কর্মহীন এবং ৫ লাখ মানুষ সম্পূর্ণ বেকার।

সূত্র: ফ্রি মালয়েশিয় টুডে, দ্য স্ট্রেইট টাইমস

বাংলাফ্লো/এনআর

Leave a Comment

Comments 0