Logo

সঙ্কট নিরসনে পারমাণবিক ইস্যুতে বৈঠকে বসছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চতুর্থ দফা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইরানি এবং মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তারা।

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চতুর্থ দফা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইরানি এবং মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রবিবার (১১ মে) ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে অংশ নেবেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনের জন্য গলার কাঁটা হয়ে আছে। তেহরানকে নতি স্বীকার করাতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জর্জরিত করে রেখেছে হোয়াইট হাউজ।

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ নীতি প্রয়োগ করে আসছেন ট্রাম্প। তবে দুপক্ষই সময়ে সময়ে দাবি করেছে,সংকট নিরসনে তারা উভয়েই কূটনৈতিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দেবে। বাগড়া লাগে মার্কিন প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া কিছু শর্ত নিয়ে,যা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতার লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার ব্রেইটবার্ট নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উইটকফ বলেছেন, আমাদের রেড লাইন হলো, কোনও ধরনের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চলবে না। এর অর্থ হচ্ছে পরমাণু কর্মসূচির সম্পূর্ণ বিলুপ্তি। এর আওতায় নাতানজ, ফোরদো ও ইসফাহানে অবস্থিত ইরানের মূল পরমাণু স্থাপনাগুলো বন্ধ করতে হবে।

উইটকফ হুঁশিয়ার করে বলেন, রবিবারের আলোচনায় অগ্রগতি না হলে আমাদের ভিন্ন পথে যেতে হবে।

উইটকফের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তেহরান এখনও খোলামনে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আলোচনার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য যদি হয় ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করা, তবে নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য আমরা পিছুপা হব না।

ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরান কিছু পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করতে পারে যদি তার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা বা মজুদকৃত ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেওয়া তাদের জন্য আপসহীন বিষয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন ইরানি কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে যা বলছে, বাস্তব আলোচনায় তা অনেকটাই ভিন্ন। আসন্ন আলোচনায় পরিস্থিতি কতটা এগোয়, তা তখনই বোঝা যাবে।

এছাড়া, ইরান পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়েও আলোচনায় যাবে না তেহরান। বরং তারা চায় এমন পোক্ত নিশ্চয়তা, যেন ট্রাম্প ভবিষ্যতে আবার চুক্তি বাতিল করতে না পারেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোকে পক্ষ করে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। তবে ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনকে সরিয়ে নেন ট্রাম্প। এবং তেহরানের ওপর পুনরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে ইরান।

জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থার মতে, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধকরণ ৯০ শতাংশ হতে হয়। গত বছর পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধকরণ চালাচ্ছে। এখান থেকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের খুব নিকট মাত্রায় পৌঁছে গেছে দেশটি।

সূত্র: রয়টার্স

বাংলাফ্লো/এসএস

Leave a Comment

Comments 0