বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫

লেজারভিত্তিক ইন্টারনেটসেবা আনছে ট্যারা

দূর-দূরান্তে ইন্টারনেটসেবা পৌঁছে দেওয়ার সেবা ‘ট্যারা’ এখন থেকে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। ২০১৬ সালে এই প্রকল্পটি প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রম শুরু করে।

ডেস্ক নিউজ: দূর-দূরান্তে ইন্টারনেটসেবা পৌঁছে দেওয়ার সেবা ‘ট্যারা’ এখন থেকে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। ২০১৬ সালে এই প্রকল্পটি প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রম শুরু করে। এতোদিন এটি ছিল গুগলের কর্ণধার প্রতিষ্ঠান ‘অ্যালফাবেট’-এর অধীন। তবে এটি স্বাধীনভাবে কাজ করলেও এর কিছু শেয়ার এখনও অ্যালফাবেট ধরে রেখেছে।

এর মাধ্যমে ইন্টারনেটসেবা ব্যবসায় শক্ত অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে অ্যালফাবেট। এর মধ্যেই শহরাঞ্চলে ইন্টারনেট দিচ্ছে গুগল ফাইবার। ট্যারার মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলেও ইন্টারনেট পৌঁছাতে পারবে অ্যালফাবেট। দূরবর্তী স্থানে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার জন্য ট্যারা ব্যবহার করছে লেজার প্রযুক্তি।

গ্রাহকের কাছে থাকা রিসিভারের সঙ্গে ট্রান্সমিশন টাওয়ারের সংযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় অবলাল লেজার রশ্মি, যা খালি চোখে দেখা যায় না। অতএব ট্যারার প্রযুক্তি অনেকটাই ফাইবার অপটিক সংযোগের মতো, শুধু ফাইবার গ্লাসের তারের বদলে সরাসরিই ট্রান্সমিটার থেকে রিসিভারে পাঠানো হয় লেজার। ফলে এতে ফাইবার অপটিক সংযোগের মতোই উচ্চগতির ইন্টারনেটসেবা পাওয়া যায়। ট্যারা কর্তৃপক্ষের দাবি, স্টারলিংকের তুলনায় ১০০ গুণ বেশি ব্যান্ডউইডথ দিতে সক্ষম তাদের সেবা।

নেটওয়ার্কের স্থাপনা তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় তূলনামূলক কম। ফলে এটি হয়ে উঠতে পারে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেটসেবা স্টারলিংকের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী।

গুগলের নিজস্ব সিলিকন ফটোনিক চিপ হচ্ছে ট্যারার মূল প্রযুক্তি। নখের সমান ক্ষুদ্র এই চিপ ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত লেজার বিম পাঠাতে সক্ষম। আর এর তথ্য সঞ্চালনের গতি প্রতি সেকেন্ডে ২০ গিগাবিট পর্যন্ত।

ফাইবার ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক তৈরিতে প্রয়োজন কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত। একই কাজ ট্যারার মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টায়ই করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য একদিন পুরো বিশ্বকেই একটি বিস্তীর্ণ নেটওয়ার্কের অংশ করা। ফলে যেখানেই প্রয়োজন, সেখানেই ইন্টারনেটসেবা পৌঁছানো যাবে।

২০১৯ সালে আফ্রিকার কিছু দেশে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ইন্টারনেটসেবা দেওয়া শুরু করে ট্যারা। এখন ১২টি দেশে কাজ করছে ট্যারা। স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্যারাকে আলাদা করার মূল উদ্দেশ্য, ট্যারা যাতে মুক্তবাজার থেকে বিনিয়োগ সংগ্রহের সুযোগ পায়। এটি যদি পুরোপুরি অ্যালফাবেটের অধীনে রাখা হতো, তাহলে সেটি সম্ভব ছিল না। অতএব প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ট্যারা দ্রুতই প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জেবি