জেলা প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাউজানে ভরদুপুরে প্রকাশ্যে স্ত্রী-কন্যার সামনে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে বোরকা পরা অস্ত্রধারীরা।
রোববার (৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাউজান উপজেলার ৮ নম্বর কদলপুর ইউনিয়নের ঈশান ভট্টের হাটে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সেলিম (৪২) ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শমসেরপাড়া এলাকার খলিলুর রহমানের বাড়ির প্রয়াত আমির হোসেনের ছেলে। তিনি এলাকায় যুবদল কর্মী হিসেবে পরিচিত।
নিহতের স্ত্রী ফেরদৌস আকতার জানান, সেলিমসহ তাঁরা তিনজন মোটরসাইকেলে করে তাঁর চাচি শাশুড়ির জানাজায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে ঈশান ভট্টের হাট থেকে ওষুধ কিনতে নেমেছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে ওঠার সময় গুলির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেরদৌস আকতার আরও বলেন, তখন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা আসে। সেখান থেকে বোরকা পরা দুজন অস্ত্রধারী বের হয়ে সেলিমের মুখ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে, সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে পড়ে যান। ওই অটোরিকশায় আরও কয়েকজন ছিলেন, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি।
পরে সেলিমকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহজাহান বলেন, ‘ওই ব্যক্তির শরীরে শটগানের দুটি গুলি লাগে। একটি গুলি তাঁর মুখের একপাশে লাগে এবং মুখটি থেঁতলে যায়। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান।’
নিহত সেলিম যুবদল কর্মী বলে তাঁর মামা মাস্টার রফিক দাবি করেছেন। এলাকায়ও তিনি দলীয় কর্মী হিসেবে প্রচার থাকলেও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে রাউজান উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রহিম উদ্দিন ওয়াসিম ও সদস্যসচিব অভি চৌধুরীকে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি।
স্থানীয়রা জানান, নিহত সেলিম এলাকার চিহ্নিত অপরাধী হিসেবে পরিচিত। তাঁকে ডাকাত হিসেবেও অনেকে চেনে। তিনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও সরকার পতনের পর বিএনপির রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন। পরে স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলেও জড়ান। এর মধ্যে বালু উত্তোলন অন্যতম।
তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন এবং মারামারি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ৯টি মামলা আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে সংবাদ পাওয়ার পর একদল পুলিশ নিয়ে তিনি হাসপাতালে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পর সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করার পর সেলিমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। এই ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে।
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0