বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় আপন ভাগ্নের হাতে খুন হন দুই খালা। এই জোড়া হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের পাশাপাশি হত্যার আলামত জব্দ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি-মিরপুর বিভাগ।

সোমবার (১২ মে) গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো ডিএমপির উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান (পিপিএম) স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার (৯ মে) দুপুর ১২:৫০ ঘটিকার পর রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ভাড়া বাসায় খুন হন মরিয়ম বেগম ও সুফিয়া বেগম। উক্ত ঘটনায় মরিয়ম বেগমের মেয়ে বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা তথ্য অনুযায়ী, ডিবি-মিরপুর বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৯ মে নিহতদের আপন ভাগ্নে মো. গোলাম রব্বানী খান ওরফে তাজ (১৪) বেলা আনুমানিক ১২টা ৫০ মিনিটের সময় শেওড়াপাড়ায় তার বড় খালা মরিয়ম বেগমের বাসায় যায়। বড় খালা মরিয়ম বেগম তাকে আপ্যায়ন করার কাজে ব্যস্ত থাকে এবং সেজো খালা সুফিয়া বেগম প্লেট বাটি ধোয়া মোছা করে বারান্দার দিকে যায়। এ সুযোগে সে বড় খালার রুমে টিভির পাশে রাখা মানিব্যাগ থেকে তিন হাজার টাকা চুরি করে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চুরির ঘটনায় তার বড় খালা বকাবকি করেন। পরবর্তীতে তার মাকে জানানোর কথা বললে সেই মুহূর্তে তাজ ডাইনিং টেবিলে থাকা লেবু কাটার ছুরি দিয়ে প্রথমে বড় খালার পেটে আঘাত করে। আঘাত প্রাপ্ত মরিয়ম বেগম রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে থামাতে উদ্যত হলে সে পুনরায় আঘাত করে। 

এ সময় তার বড় খালার চিৎকার শুনে সেজো খালা সুফিয়া বেগম পাশের রুম থেকে ছুটে এসে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাকেও একই চাকু দিয়ে পেটে একবার আঘাত করা হয়-উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

পরবর্তীতে তিনি ঘরের মেঝেতে পড়ে যান বলে জানানো হয়েছে ডিএমপি’র বিজ্ঞপ্তিতে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়,অভিযুক্ত তাজ রান্নাঘর থেকে শিল-নোড়া এনে তার বড় খালা ও সেজো খালার মাথায় কয়েকবার আঘাত করে। তারপর সে টয়লেটে গিয়ে তার হাতে ও মুখে লেগে থাকা রক্ত পানি দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন হয়। এরপর পাশের রুমে গিয়ে রক্তমাখা টি-শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পাল্টে খালাতো বোনের ব্যবহৃত একটি জিন্স প্যান্ট ও তার ব্যাগে থাকা আরেকটি রঙিন টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে বাইরে থেকে দরজা লক করে চাবি নিয়ে একটি সিএনজি করে শনির আখড়ার উদ্দেশে রওয়ানা করে।

ডিবি-মিরপুর বিভাগ সূত্রের উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মামলা রুজুর পর গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ, নিবিড় তদন্ত ও প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার ঘটনায় জড়িত মো. গোলাম রব্বানী খান ওরফে তাজের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে রবিবার (১১ মে ) ভোর আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটের সময় ঝালকাঠি জেলার সদর এলাকায় তার নানা বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রক্তমাখা কাপড়, জুতা এবং অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়ার আলামতের মাঝে রয়েছে রক্ত মাখা নীল রঙের টি-শার্ট, রক্ত মাখা দুটি জিন্স প্যান্ট যার মাঝে একটি তার ও একটি তার খালাতো বোন মিষ্টির।

সোমবার (১২ মে ) গ্রেফতারকৃত তাজকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে সে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

বাংলাফ্লো/এসএস