মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গোয়ালন্দে গ্রেপ্তার আতঙ্কে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনরা এলাকাছাড়া!

তাঁরা শুক্রবারের ঘটনার পরই ছুটি নিয়ে বা ছুটি ছাড়াই নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। স্থানীয় ইমামদের অনেকেও মসজিদ ও বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন।

ছবি-সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ‘নুরাল পাগলা’র দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং কবর থেকে মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার পর, দুটি মামলায় হাজার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করায়, পুরো উপজেলা জুড়ে এখন ‘গ্রেপ্তার আতঙ্ক’ বিরাজ করছে। এই আতঙ্কে উপজেলার অধিকাংশ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার শিক্ষক এবং এমনকি বাজারের অনেক দোকানদারও এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব মসজিদের ইমামদের বাড়ি গোয়ালন্দের বাইরে, তাঁরা শুক্রবারের ঘটনার পরই ছুটি নিয়ে বা ছুটি ছাড়াই নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। স্থানীয় ইমামদের অনেকেও মসজিদ ও বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন।

দৌলতদিয়ার একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন আজিম খাঁ জানান, তাঁদের মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার পরই তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরায় চলে গেছেন। গোয়ালন্দ বাজার বড় মসজিদের ইমাম এবং উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আবু সাইদও বর্তমানে এলাকার বাইরে রয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, “শুক্রবারর ন্যক্কারজনক ঘটনার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছি। কোনো ধরনের অন্যায় করিনি। তারপরও ভয় হয় কখন জানি কী হয়ে যায়।”

এদিকে, এলাকায় সৃষ্ট এই গ্রেপ্তার আতঙ্ক কমাতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন। সোমবার দুপুরে, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশনস) মো. সিদ্দিকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নিরপরাধ সাধারণ জনগণকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আশ্বস্ত করেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, “পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অযথা কাউকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হবে না।”

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’র ডাকা এক সমাবেশ থেকে ‘নুরাল পাগলা’র দরবারে হামলা চালানো হয়। সেই সহিংসতায় একজন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপরও হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি এবং নিহত রাসেলের বাবা বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে মোট ১৮ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বাংলাফ্লো/এইচএম

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0