স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: বিসিবির লঙ্কান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার আচরণ সমস্যার কথা কর্মকর্তাদের ভালো করেই জানা। সহকর্মীদের সঙ্গে টুকটাক লেগেই থাকে তাঁর। অভিযোগ আছে নিউজিল্যান্ডের কিউরেটর অ্যান্ডি অ্যাটকিনসন বিসিবির চাকরি ছেড়ে গেছেন গামিনির কারণে। সব ছাপিয়ে কিউরেটর গামিনি নতুন করে আলোচনায় জাতীয় দলের পেসার এবাদত হোসেনকে হেনস্তা করে।
বিসিবি থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টাইগার পেসারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বোর্ডের এ কিউরেটর।
নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচ ছিল মিরপুরে। এ ম্যাচের একাদশে না থাকায় বিরতিতে সেন্টারের সাইড উইকেটে পেস বোলিং কোচ নাজমুল হোসেনকে নিয়ে স্পট বোলিং করেন এবাদত। উইকেট ভালো না হওয়ায় মন্তব্য করায় গামিনি ক্ষেপে বাজে মন্তব্য করেন। এরপর উভয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান বলে জানান একজন প্রত্যক্ষদর্শী। একপর্যায়ে এবাদতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন কিউরেটর।
ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘গামিনি ঝগড়া করে থেমে গেলে সমস্যা ছিল না। গ্রান্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনাম স্যারকে বলে জাতীয় দল থেকে এবাদতকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। একজন কিউরেটর তো জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে এভাবে হুমকি দিতে পারেন না।’
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে গতকাল নাজমুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ল্যান্ডিং জোনে পিচ ঠিক ছিল না। ল্যান্ড করার সঙ্গে সঙ্গে মাটি ভেঙে গর্ত হচ্ছিল। এবাদত মাত্র ইনজুরি থেকে ফিরেছে। সে উদ্বেগ থেকে বলেছে, কী উইকেট বানান, ভালো উইকেট বানাতে পারেন না। গামিনির উত্তর ছিল তোমার কাজ করো, আমার কাজ নিয়ে কথা বলতে হবে না। এরপর তো সে হুমকি দেয় মাহাবুব ভাইকে বলে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। আমি তাকে আমার মতো করে যা বলার বলেছি।’
এ নিয়ে এবাদতকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করা যায় না। আমার সঙ্গে যা কিছু হয়েছে, নাজমুল ভাই দেখেছেন। আমি যেখানে জানানোর, সেখানে জানিয়েছি। বাকি সিদ্ধান্ত তাদের।’
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গামিনির কাছে হেনস্তা হয়ে বোলিং না করে ড্রেসিংরুমে ফিরে এবাদত টিম ম্যানেজমেন্টকে বিষয়টি জানান। তৎক্ষণাৎ ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম সেলিম গিয়ে গামিনির কাছে ঘটনা জানতে চাইলে নিজের ভুল স্বীকার করেন বলে সমকালকে নিশ্চিত করেন কোচ মিজানুর রহমান বাবুল।
ওই ঘটনার পর ক্রিকেটাররা ক্ষিপ্ত হয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। এর আগেই পরিস্থিত স্বাভাবিক করেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
শনিবার ফাহিমের কাছে ঘটনা বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি নৈতিক জায়গা থেকে কিছু বলতে পারব না। আমার কাজ হলো সমস্যার সমাধান করা।’
গতকাল ফোনে ম্যানেজার সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। এবাদতকে হেনস্তা ও হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে গামিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কিছুই হয়নি। সে উইকেট চেয়েছে, দিয়েছি। বৃষ্টির কারণে উইকেট একটু খারাপ হতেই পারে। আমি ওর কথার কোনো উত্তর দিইনি। হুমকি দেওয়ার কথা ভিত্তিহীন।’
এবাদত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে অভিযোগ করেছেন বলা হলে গামিনির উত্তর ছিল, ‘আমাকে তো কেউ ডাকেনি।’ যদিও সমকালের সঙ্গে কথা বলার ৩ ঘণ্টা আগে গামিনিকে ডেকে সতর্ক করেছেন নাজমুল আবেদীন। এ প্রসঙ্গে গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনামকে ফোন করা হলে কথা বলার সময় পাননি তিনি।
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0