স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: ইংল্যান্ডের সদ্য সমাপ্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দ্য হান্ড্রেডে নজর কেড়ে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন সনি বেকার। কিন্তু তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অভিষেকটা হলো দুঃস্বপ্নের মতো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭ উইকেটে বড় হারের ম্যাচে তিনি বল হাতে বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছেন। ৭ ওভারে উইকেটশূন্য থেকে ৭৬ রান খরচ করেছেন ২২ বছর বয়সী এই পেসার।
লিডসের হেডিংলিতে গতকাল (মঙ্গলবার) থেকে শুরু হয়েছে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে সিরিজ। এদিনই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পথচলা শুরু হয় সনি বেকারের। দ্য হান্ড্রেডে ৭ ম্যাচে ৯ উইকেট আহামরি না হলেও গতিময় বোলিংয়ে তার ইকোনমি (৭.৬৮) ভালোই ছিল। সেই গতি প্রোটিয়াদের বিপক্ষেও তুলেছিলেন বেকার, কিন্তু বারবার শর্ট কিংবা একেবারে ফুলার লেংথে দিয়ে বেদম মার খেয়েছেন এইডেন মার্করামদের হাতে।
ইংল্যান্ড ম্যাচটিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে। জেমি স্মিথের ফিফটি ছাড়া স্বাগতিকদের আর কেউই বলার মতো রান করতে পারেননি। ফলে মাত্র ২৪.৩ ওভার ১৩১ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংলিশরা। প্রোটিয়াদের পক্ষে কেশভ মহারাজ ৪ এবং উইয়ান মুল্ডার ৩ উইকেট শিকার করেন। ওয়ানডেতে একজন ব্যাটারের ফিফটি সত্ত্বেও ১৩১ রান ইংল্যান্ডের তৃতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এ ছাড়া ওয়ানডের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে (২৪.৩ ওভার) অলআউট হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান পঞ্চম।
সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে মার্করাম ও রায়ান রিকেলটনের সামনে আক্রমণে আসেন সনি বেকার। জোফরা আর্চারের বলে যেখানে কয়েকবার আউটের সম্ভাবনা জেগেছিল, তখন সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র ছিল অভিষিক্ত পেসারের। দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৫০ রান তুলে ফেলে, এর মধ্যে ৩ ওভারে ১ মেইডেনসহ ৫ রান দেন আর্চার। তার মানে বাকি ৩ ওভারে বেকার ৪৪ রান দিয়েছেন। তার প্রথম ওভারেই ৩ চারসহ ১৪ রান নিয়ে স্বাগত জানান মার্করাম। এরপর তৃতীয় ওভারে ২০ ও চতুর্থ ১২ রান দেওয়ার পর বোলিংয়ে আসেন ব্রাইডন কার্স। তখন আবার প্রোটিয়াদের রানে লাগাম পড়ে।
শেষ পর্যন্ত ৭ ওভারে ১০.৮৫ গড়ে ৭৬ রান দিলেন বেকার। যা ওয়ানডে অভিষেকে কোনো ইংলিশ বোলারের সর্বোচ্চ ইকোনমিতে রান খরচের রেকর্ড। এর মধ্য দিয়ে তিনি লিয়াম ডসনের রেকর্ড ভেঙেছেন। ২০১৬ সালে এই স্পিনার পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ ওভঅরে ৮.৭৫ ইকোনমিতে খরচ করেন ৭০ রান। এ ছাড়া সবমিলিয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ইকোনমিতে রান খরচের তালিকায়ও সনি বেকারের অবস্থান দ্বিতীয়। গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেডিয়াহ ব্লেডস অভিষেক ওয়ানডেতে ৬ ওভারে (ইকোনমি ১২.১৬) ৭৩ রান দেন।
এদিকে, বেকারকে সবচেয়ে বেশি নাস্তানাবুদ করা প্রোটিয়া তারকা এইডেন মার্করাম মাত্র ২৩ বলে ফিফটি করেন। যা ইংলিশদের বিপক্ষে প্রোটিয়া ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম। শেষ পর্যন্ত এই ডানহাতি ব্যাটার ৫৫ বলে ১৩ চার ও দুই ছক্কায় ৮৬ রান করেন। এ ছাড়া রায়ান রিকেলটন ৩১ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছেন। তবে মার্করাম আউট হওয়ার পর জয়ের জন্য ১ রান বাকি থাকতেই আউট হন প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ও ক্রিস্টিয়ান স্টাবস। শেষ পর্যন্ত ১৭৫ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে জিতেছে আফ্রিকানরা। ৩টি উইকেটই নিয়েছেন আদিল রশিদ।
বলের হিসাবে এটি প্রোটিয়াদের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপে তারা ১৮৪ বল এবং ৯ উইকেট হাতে রেখে জিতেছিল। এ ছাড়া গতকাল দু’দল মিলিয়ে খেলেছে ২৭২ বল, দুই দলের মুখোমুখি দেখায় যা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। ২০০৮ সালে ইংল্যান্ড-আফ্রিকা ২২৩ বলের একটি ওয়ানডে খেলেছিল।
বাংলাফ্লো/এসও
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0