Logo

বয়স্ক ভাতা বাড়ছে ৫০ টাকা

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে বয়স্কভাতা ৫০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাজেটে দরিদ্র, প্রান্তিক ও ঝুঁকিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য হ্রাস, সামাজিক বৈষম্য হ্রাস, এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে বাজেটে সুবিধাভোগীর সংখ্যা এবং মাথাপিছু বরাদ্দ উভয়ই বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে অন্তর্বতীকালীন সরকার।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট প্রস্তাবে বলেন, “বয়স্ক ভাতার মাসিক হার ৬০০ টাকা হতে ৬৫০ টাকায়, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের মাসিক ভাতা ৫৫০ টাকা হতে ৬৫০ টাকায়, প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা ৮৫০ টাকা হতে ৯০০ টাকায়, এবং মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির আওতায় প্রদত্ত মাসিক ভাতার হার ৮০০ হতে ৮৫০ টাকায় বৃদ্ধি। এছাড়া, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য মাসিক ভাতার হার ৬৫০ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করছি।”

একইসঙ্গে উপকারভোগীর সংখ্যা ‘যৌক্তিক পরিমাণে’ বাড়ানোর হবে বলে জানান উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

দেশের ৬৫ বছরে বেশি বয়সি পুরুষ ও ৬২ বছরের ঊর্ধ্বের নারী, যার অসচ্ছল-অসহায় এবং যাদের বার্ষিক আয় ১০ হাজার টাকার নিচে তারা বয়স্ক ভাতা পাওয়ার আবেদন করতে পারেন।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৮ লাখ ১ হাজার বয়স্ক ব্যক্তিকে জনপ্রতি মাসিক ৬০০ টাকা হারে মোট ৪ হাজার ২০৫ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন বয়স্ক বা প্রবীণ নাগরিকরা। জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনগণের ৬ দশমিক ১৪ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। অর্থাৎ বয়স্ক জনগোষ্ঠী ১ কোটি ১০ লাখ ৪১ হাজার ৪৯৫ জন।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট প্রস্তাবে বলেন, “আমি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ আগামী অর্থবছরে ৬ মাসে উন্নীত করার প্রস্তাব করছি। একই সাথে বর্তমানে সহায়তাপ্রাপ্ত ৫০ লক্ষ পরিবারের অতিরিক্ত আরও ৫ লক্ষ পরিবারকে এর আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব করছি।”

তিনি আরও বলেন, “সামাজিক নিরাপত্তার অধীনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি।”

অর্থ উপদেষ্টা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ব্যাপ্তি এবং গুরুত্ব বিবেচনায় আগামী অর্থবছরে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন।

এক্ষেত্রে পেনশন ব্যতীত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য মোট এক লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। যা আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) তুলনায় ৯ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা বেশি ছিল।

এই বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১৭.০৬% এবং জিডিপির ২.৪৩%।

তবে এবারের বাজেটে মোট সামাজিক নিরাপত্তা বরাদ্দ বাজেট প্রস্তাবের প্রায় ১৪.৭৭% এবং জিডিপির প্রায় ২.১০%। যা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (পেনশন বাদে) বাজেট প্রস্তাবের প্রায় ১১.৫৬% ও জিডিপির প্রায় ১.৬৪%।

বাংলাফ্লো/এসও

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0