বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে দ্রুত ও দক্ষভাবে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য মাঠে নেমেছে প্রায় ২০ হাজার কর্মী। ১২ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করে নগরবাসীকে একটি পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশনই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ১০ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোতায়েন করেছে, যাদের সহায়তায় আছে ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ২০০টি মিনি ট্রাক এবং অন্যান্য পরিচ্ছন্নতা সরঞ্জাম। এই সিটি করপোরেশন ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
প্রস্তুতি হিসেবে, ডিএসসিসি ৭৫টি ওয়ার্ডে এক দশমিক চার লাখ বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ, ৪০ টন ব্লিচিং পাউডার এবং ২২২ গ্যালন জীবাণুনাশক বিতরণ করেছে।
ডিএসসিসি প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, আমরা বাসিন্দাদের শুধুমাত্র নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেওয়া এবং বর্জ্য ফেলার জন্য অনুরোধ করেছি। দয়া করে যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলবেন না।
তিনি আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে ডিএসসিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত সব কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে, যেন কাজে কোনও বিঘ্ন না ঘটে। ঈদ জামাত, পশুর হাট এবং বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত জরুরি সমন্বয়ের জন্য নগর ভবনে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণে বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, এই শহরে কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সময়মতো বর্জ্য অপসারণ না হলে দুর্গন্ধ ছড়ায়, এমনকি রোগ-জীবাণু সৃষ্টি হতে পারে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ১২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে উপদেষ্টা বলেন, এ বছর কোরবানির বর্জ্যের কারণে নগরবাসীর ঈদ আনন্দ বাঁধাগ্রস্ত হবে না।
এদিকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জরুরি পরিচালন কেন্দ্রে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপিত হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
অপরদিকে ডিএনসিসি একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের জনসংযোগ বিভাগের তথ্য অনুসারে, ঈদে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে ২২৪টি ডাম্প ট্রাক, ৩৮১টি পিকআপ ভ্যান এবং ২৪টি পেলোডার সক্রিয় রয়েছে।
ডিএনসিসি এবারের ঈদে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সাড়ে ১২ লাখ পলিথিন ব্যাগ, দুই হাজার ৫০০ বস্তা ব্লিচিং পাউডার এবং ৪ হাজার ক্যান জীবাণুনাশক বিতরণ করেছে। এছাড়াও, কোরবানির পশুর বর্জ্য ফেলার জন্য আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে শুধুমাত্র এই বর্জ্য ফেলার জন্য একটি আলাদা প্ল্যাটফর্ম প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সেখানে দুটি গর্ত (ট্রেঞ্চ) খনন করা হয়েছে।
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ আজাজ বলেন, কোরবানির বর্জ্য দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। শহরকে পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য রাখতে আমরা দিনের মধ্যেই কোরবানির সমস্ত বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্য নিয়েছি। ডিএনসিসি এ বছর ঈদে প্রায় ২০ হাজার টন বর্জ্য সরানোর প্রস্তুতি নিয়েছে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0