শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘বন্দুকের বদলে ব্যাট’—আফগানিস্তানের ক্রিকেটে এক ভারতীয়র ঐতিহাসিক অবদান

২০০৭ সালে আফগানিস্তান ওমানের সঙ্গে যৌথভাবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এএসসি) টি-টোয়েন্টি কাপ জেতার পরই শুরু হয় ভাটিয়ার এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।

ছবি: সংগৃহীত

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: দুবাইভিত্তিক ভারতীয় ব্যবসায়ী শ্যাম ভাটিয়া শুধু সফল উদ্যোক্তাই নন, বরং এক অনন্য ক্রিকেটপ্রেমী। খেলার প্রসার ঘটাতে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছুটে যান তিনি।

২০০৭ সালে আফগানিস্তান ওমানের সঙ্গে যৌথভাবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এএসসি) টি-টোয়েন্টি কাপ জেতার পরই শুরু হয় ভাটিয়ার এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।

সেই সময় আফগানিস্তানের ক্রিকেটারদের জন্য তিনি ভারত থেকে বিমানযোগে কিট পাঠান। কয়েকদিন পর আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড থেকে আসা একটি বার্তায় বলা হয়েছিল, ‘আমাদের শিশুরা এতদিন শুধু বন্দুক দেখেছে, এখন তারা ব্যাট দেখছে। এটা ক্রিকেট খেলতে তাদের জন্য দারুণ উৎসাহ। ’

আফগানিস্তানের উত্থান

সেই শিশুদের দেশ আজ টেস্ট মর্যাদা অর্জন করেছে, বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে উঠেছে, তৈরি করেছে একঝাঁক প্রতিভাবান ক্রিকেটার। ভাটিয়া গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘কেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস কিংবা ইউএই একসময় ভালো করেছিল, কিন্তু তারা টিকে থাকতে পারেনি। আফগানিস্তানের পার্থক্য হলো, তারা ক্ষুধার্ত। এ কারণেই তারা এত দ্রুত এগোচ্ছে। ’

২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার প্রসার ঘটানোর জন্য আইসিসি তাকে বিশেষভাবে সম্মানিতও করে।

শৃঙ্খলার পাঠ

তবে প্রতিভা থাকলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ধারাবাহিকতা পেতে হিমশিম খাচ্ছিল আফগানরা। ২০২২ সালের জুলাইয়ে সাবেক ইংলিশ ব্যাটার জনাথন ট্রট কোচ হয়ে দলটিকে বদলে দেন।

ট্রট বলেন, ‘দলে অনেক প্রতিভা ছিল, কিন্তু শৃঙ্খলার ঘাটতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আমি প্রথমেই বলেছিলাম—আমাদের ট্রেনিং আরও উন্নত করতে হবে। তাই অনুশীলন, ফিটনেসে বাড়তি মনোযোগ দিই। এরপর থেকেই জয় আসতে শুরু করে। ’

ট্রট এখনো খেলোয়াড়দের বিশেষ করে স্পিনারদের দক্ষতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে যাচ্ছেন।

এশিয়া কাপে প্রত্যাশা

শারজায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বড় ব্যবধানে হেরে গেলেও আফগানিস্তানকে এশিয়া কাপে ‘ডার্ক হর্স’ হিসেবে দেখছেন অনেকে। আবুধাবিতে মঙ্গলবার হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে তাদের অভিযান।

কোচ ট্রট অবশ্য বাস্তববাদী, ‘আমরা কোনো বড় লক্ষ্য ঠিক করি না। শুধু সামনে যে ম্যাচ সেটাতেই মনোযোগ দিই। দূরে তাকালে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ’

ভাটিয়ার সমর্থন

যদিও তিনি পুরনো ধাঁচের ক্রিকেট পছন্দ করেন, টি-টোয়েন্টি তেমন দেখেন না, তবু ভাটিয়া আফগানিস্তানের প্রতিটি ম্যাচেই সমর্থন দেবেন। তিনি মুচকি হেসে বলেন, ‘শুধু ভারত ছাড়া বাকি সব ম্যাচেই আমি আফগানিস্তানের জন্য চিয়ার করব। ’

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শরণার্থী শিবির থেকে উঠে আসা ক্রিকেটারদের এই সাফল্যের গল্পই ভাটিয়াকে অনুপ্রাণিত করেছিল—আর তিনি নিজের সাধ্য অনুযায়ী পাঠিয়েছিলেন ক্রিকেট কিটস, যা হয়তো আফগানিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।

বাংলাফ্লো/এসও

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে ফের সৌরভ
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৮:০৩ রাত
রাত পোহালেই পর্দা উঠছে এনসিএল টি-টোয়েন্টির
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৭:৪২ বিকাল
ভারতে খেলতে আসছেন রোনালদো!
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৭:০৬ বিকাল
‘সবচেয়ে খারাপ সময়ে ভারত-পাকিস্তান লড়াই’
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৬:৪৯ বিকাল
Leave a Comment

Comments 0