বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: ২৫ ঘণ্টা ধরে আমরণ অনশন করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৯ শিক্ষার্থী। প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বাম সংগঠনের কিছু নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিলে এ কর্মসূচি পালন করছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান নেয় তারা। তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে কোনো আশ্বাস বা কেউ তাদের দেখতে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন অনশনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা হলেন, সংগীত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ এবং একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহ জান।
এ ছাড়া বাংলা বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা অনশন করছেন।
অনশনরত শিক্ষার্থী নাইম শাহ জাহান বলেন, আমরা প্রশাসনকে সাত দফা দাবি দিয়েছিলাম। এ নিয়ে তাদের সাথে আমরা কথা বলতে গেলে আমাদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হয়। মূলত দাবির কিছুই পূরণ হয়নি। দাবি আদায়ে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। প্রায় ২৫ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সাথে এখনো দেখা করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা আমাদের দাবিতে অটল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ ঠিক করার যথেষ্ট চেষ্টা করছি। তারা এখন এই পরিবেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাচ্ছে। যারা এসব বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায় তারা শিক্ষার্থীদের সমর্থন পাবে না।
এর আগে শুক্রবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলা ঝুপড়িতে একটি সংবাদ সম্মেলনে এই ৭ দফা দাবি জানায় ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’।
৭ দফা দাবিগুলো হলো, আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা প্রদান, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সকলপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরাপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা।
এ ছাড়া বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা, ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা ও সিন্ডিকেটকর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাকরায়ন করাসহ শিক্ষার্থী আহতের ঘটনার দায় নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করার দাবি জানায় তারা।
বাংলাফ্লো/এফএ
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0