শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতির কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের বর্তমানে নার্সের সংকট রয়েছে। তবে নার্সিং শুধু জাতীয় সমস্যা নয়—এটি একটি বৈশ্বিক প্রয়োজন। আমরা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য আরও নার্স প্রশিক্ষণ দিতে চাই।

বুধবার যমুনায় ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন। ছবি : প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক

বাংলা ফ্লো প্রতিবেদক

ঢাকা: দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য যুক্তরাজ্যকে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (৯ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি রূপান্তরমূলক সময়। আমরা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন এবং অগ্রাধিকার পুননির্ধারণে মনোনিবেশ করছি।

বাংলাদেশে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতির কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের বর্তমানে নার্সের সংকট রয়েছে। তবে নার্সিং শুধু জাতীয় সমস্যা নয়—এটি একটি বৈশ্বিক প্রয়োজন। আমরা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য আরও নার্স প্রশিক্ষণ দিতে চাই।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকা স্বাস্থ্যখাত শক্তিশালী করতে যুক্তরাজ্যের সহায়তার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য কার্যক্রম প্রায় অকার্যকর। এখানে যুক্তরাজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আরেকটি সম্ভাবনাময় খাত হলো ওষুধশিল্প। আমরা অনুরোধ করছি, পেটেন্ট সুরক্ষা তুলে নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিন, যাতে প্রতিটি দেশ সাশ্রয়ীভাবে সামাজিক ব্যবসা মডেলে টিকা উৎপাদন করতে পারে।

বৈঠকে উভয়পক্ষ শিক্ষা, টেক্সটাইল শিল্প, প্রতিরক্ষা এবং বিমান চলাচলসহ কৌশলগত সহযোগিতার আরও বিস্তৃত ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, টেক্সটাইল খাত আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা ও বিমান চলাচলে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যের সহায়তাকে স্বাগত জানাই।

উভয় নেতা এই খাতে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময় এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জেন্ডার সমতার ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা সব খাতে নারীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দেই। নারীর ক্ষমতায়ন আমাদের উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রে রয়েছে।

ব্যারোনেস উইন্টারটন বর্তমান সংস্কার এজেন্ডার প্রতি যুক্তরাজ্য সরকারের সমর্থন জানান। তিনি বাংলাদেশের সাংবিধানিক সংস্কার কর্মসূচির প্রধান আলী রিয়াজের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো স্বল্প সংস্কার প্রক্রিয়ায় একমত হয়, তবে ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে পারে। তবে যদি বৃহত্তর সংস্কার পথ বেছে নেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচন জুনে অনুষ্ঠিত হতে পারে।

ব্যারোনেস উইন্টারটন বলেন, আমাদের মধ্যে দীর্ঘ ও বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক রয়েছে এবং সংস্কারের যে ধারা দেখা যাচ্ছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।

বৈঠকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0