Logo

সুপার-আর্থের নতুন আবিষ্কার : সৌরজগতের বাইরে বৃহত্তর গ্রহের সন্ধান

এই বৃহদাকার পৃথিবী সদৃশ গ্রহটিকে "সুপার-আর্থ" বলা হচ্ছে, কারণ এর আকার পৃথিবীর চেয়ে বড় হলেও নেপচুনের চেয়ে ছোট।

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাফ্লো ডেস্ক

ঢাকা:হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (CfA)-এর ওয়েইচেং ঝাং-এর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল সম্প্রতি এমন এক গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যার আকার পৃথিবীর দ্বিগুণ এবং এটি তার নক্ষত্রকে শনির চেয়েও অনেক দূর থেকে প্রদক্ষিণ করে। ২০২৫ সালের ২৫ এপ্রিল Science জার্নালে প্রথম এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়। গবেষকরা এই তথ্য সংগ্রহ করেছেন কোরিয়া মাইক্রোলেন্সিং টেলিস্কোপ নেটওয়ার্ক (KMTNet) থেকে, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় মাইক্রোলেন্সিং জরিপ হিসেবে পরিচিত।

এই বৃহদাকার পৃথিবী সদৃশ গ্রহটিকে 'সুপার-আর্থ' বলা হচ্ছে, কারণ এর আকার পৃথিবীর চেয়ে বড় হলেও নেপচুনের চেয়ে ছোট। এই আবিষ্কারটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এতে বহু গ্রহের ভর তাদের নক্ষত্রের তুলনায় নির্ণয় করা হয়েছে। physics.org জানায়, গবেষকরা মিল্কি ওয়ের চারপাশে থাকা গ্রহগুলোর সম্পর্কে নতুন তথ্যও আবিষ্কার করেছেন।

কোরিয়ান মাইক্রোলেন্সিং টেলিস্কোপের মাধ্যমে পরিচালিত এই গবেষণায় এমন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে দূরের বস্তু থেকে আসা আলোকরশ্মি একটি মধ্যবর্তী বস্তু (গ্রহ) দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বাড়ানো হয়। এই মাইক্রোলেন্সিং পদ্ধতি পৃথিবী ও শনির কক্ষপথের মাঝামাঝি দূরত্বে অবস্থিত গ্রহ খোঁজার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।

গবেষণা অনুযায়ী, এবারকার জরিপে তিনগুণ বেশি গ্রহের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে এমন কিছু গ্রহও রয়েছে যেগুলো পূর্বে মাইক্রোলেন্সিং পদ্ধতিতে আবিষ্কৃত গ্রহগুলোর তুলনায় আট গুণ ছোট। অধ্যাপক শুয়ে মাও বলেন, এই নতুন তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে ঠান্ডা অঞ্চলের গ্রহগুলো কীভাবে গঠিত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি এবং অস্ট্রেলিয়ায় স্থাপিত তিনটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে KMTNet এই তথ্য সংগ্রহ করেছে।

এ ধরনের গবেষণাগুলো দেখায় যে অন্যান্য সৌরজগতগুলোতেও পৃথিবীর কক্ষপথের আশেপাশে ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের গ্রহ থাকতে পারে। CfA-এর নেতৃত্বাধীন গবেষণা দল মনে করে, অন্যান্য সৌরজগতের বাইরের অঞ্চলেও পৃথিবীর তুলনায় বড় আকারের আরও বেশি সুপার-আর্থ ধরনের গ্রহ থাকতে পারে। গবেষক জেনিফার ইয়ি বলেন, পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে অন্য গ্যালাক্সিতেও এরকম গ্রহের সংখ্যা অনেক হতে পারে, যেগুলোর আকার পৃথিবীর চেয়ে বড় কিন্তু নেপচুনের চেয়ে ছোট।

KMTNet পরিচালনাকারী ইউন কি জুং জানান, বৃহস্পতি সদৃশ কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান অন্যান্য গ্রহমণ্ডলগুলো আমাদের সৌরজগতের মতো নাও হতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখন নির্ধারণের চেষ্টা করবেন, এই ধরনের কতগুলো গ্রহ মহাবিশ্বে রয়েছে। গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, মহাবিশ্বে নেপচুন-আকারের গ্রহের মতোই সংখ্যায় প্রচুর সুপার-আর্থ রয়েছে।

বাংলাফ্লো/আফি

Related Posts টেকনোলজি

Leave a Comment

Comments 0