বাংলাফ্লো ডেস্ক
ঢাকা: বর্তমানে বিজ্ঞানের জগতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মেশিন লার্নিং। এ প্রযুক্তি শুধু তথ্য বিশ্লেষণেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আবিষ্কারের পদ্ধতিকে আমূল বদলে দিচ্ছে। চিকিৎসা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, এমনকি জ্যোতির্বিজ্ঞানেও মেশিন লার্নিং ইতিমধ্যেই যুগান্তকারী সাফল্য এনে দিয়েছে। আগে বিজ্ঞানীরা সীমিত পরিসরে তথ্য বিশ্লেষণ করে ধাপে ধাপে আবিষ্কার করতেন। কিন্তু আজকের দিনে তথ্যের পরিমাণ এত বেড়ে গেছে যে, মানুষ নিজে নিজে সব বিশ্লেষণ করতে পারছে না। বিশাল এই তথ্যের সাগরে মানুষ যখন হিমশিম খাচ্ছিল, ঠিক তখনই মেশিন লার্নিং হয়ে উঠেছে উদ্ধারকর্তা।
কোথায় কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই প্রযুক্তি?
চিকিৎসায়: ভবিষ্যতে সেপসিস, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, এমনকি অ্যালঝেইমার রোগ আগেভাগেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে। বয়স, লিঙ্গ ও জিনগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ব্যক্তিগত ওষুধ তৈরি হবে।
জীববিজ্ঞানে: DeepMind এর AlphaFold2 প্রযুক্তি এখন প্রোটিনের ত্রিমাত্রিক গঠন মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে, যা আগে মাসের পর মাস সময় নিত।
রসায়নে: নতুন ওষুধ আবিষ্কারের আগে কম্পিউটারই জানিয়ে দিচ্ছে কোন অণু কতটা কার্যকরী হবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানে: রাতভর টেলিস্কোপের তোলা টেরাবাইট পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ করছে এই প্রযুক্তি।
দুটি ঐতিহাসিক ঘটনা এই অগ্রগতির পথ খুলে দেয়:
1. ImageNet প্রতিযোগিতা (২০১২): AlexNet নামে একটি নিউরাল নেটওয়ার্ক কম্পিউটার নিজে নিজেই ছবি চিনে ফেলতে সক্ষম হয়।
2. AlphaGo (২০১৬): DeepMind তৈরি করে এমন এক সিস্টেম, যা গেম খেলে নিজের ভুল থেকে শেখে এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে দেয়।
মেশিন লার্নিং এখন বিজ্ঞানকে সমর্থন করছে, গবেষণার গতি বাড়াচ্ছে এবং এমন কিছু আবিষ্কার করছে যা মানুষের পক্ষে কল্পনাও করা কঠিন। আগামী দিনে, মানুষের কল্পনাশক্তিই হবে সীমা, প্রযুক্তি নয়।
সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
বাংলাফ্লো/আফি
Comments 0