Logo

তৈরি পোশাকের ২৮ ধরনের অ্যাকসেসরিজ রপ্তানি

null

বিশেষ প্রতিনিধি: দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় দুর্বলতা ছিল লিড টাইম। লিড টাইম হলো ক্রেতার কাছ থেকে রপ্তানি আদেশ পাওয়ার পর পোশাক তৈরি করে ক্রেতার হাতে পৌঁছানো। পণ্যভেদে ভিন্নতা বাদ দিলে গড়ে একটি পোশাক তৈরিতে অন্তত ৩০ ধরনের কাঁচামালের ব্যবহার হয়ে থাকে। দেশে শক্তিশালী পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প গড়ে না ওঠায় এসব অ্যাকসেসরিজের প্রায় সবই একসময় আমদানিনির্ভর ছিল। এতে রপ্তানি আদেশ পাওয়ার পর কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়ায় একটা লম্বা সময় লেগে যেত। এখনও ‘লিড টাইম’ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পোশাক তৈরি এবং রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করতে বোতাম হ্যাঙ্গার থেকে সিকিউরিটি ট্যাগসহ অন্তত ২৮ ধরনের অ্যাকসেসরিজের প্রয়োজন হয়। যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন অ্যাকসেসরিজ। এসব অ্যাকসেসরিজ এখন দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। এতে লিড টাইমের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সময় সাশ্রয় হচ্ছে। অর্থ সাশ্রয় তো আছেই। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে পরিমাণের দিক থেকে চীন ও ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠে আসে বাংলাদেশ। এই বিপুল পরিমাণ পোশাক উৎপাদনে পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প হিসেবে প্রয়োজনীয় অ্যাকসেসরিজের উল্লেখযোগ্য অংশের জোগান আসে স্থানীয়ভাবে। গত অর্থবছর প্রায় ৭০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয় আসে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকসেসরিজ রপ্তানি থেকে। দেশীয় মুদ্রায় এ পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এর বড় অংশই প্রচ্ছন্ন রপ্তানি অর্থাৎ রপ্তানিমুখী দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাছে রপ্তানি করা হয়। অর্থাৎ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে গত অর্থবছর এই ৭০০ কোটি ডলার সাশ্রয় হয় অ্যাকসেসরিজ শিল্পের মাধ্যমে। প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ছাড়াও সাশ্রয়ী এবং মানসম্পন্ন হওয়ায় গত বছর ১০০ কোটি ডলার বা ১২ হাজার কোটি টাকা সরাসরি ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। আগামী ২০৩০ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে এ খাতের রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর। এতে অন্তত ১৫ কোটি ডলারের অ্যাকসেসরিজের প্রয়োজন হবে। অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রচ্ছন্ন রপ্তানি বাড়ানোর এ সুযোগের বাইরেও সরাসরি রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। জার্মানিভিত্তিক বৈশ্বিক ডেটা এবং 9য়িক প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার তথ্যমতে, প্যাকেজিংয়ের বিশ্ববাজার ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ বাজার। ১৬০ দেশের বাজার চাহিদার ভিত্তিতে সংস্থা বলেছে, ২০৩২ সাল নাগাদ প্যাকেজিংয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের আকার দাঁড়াবে ১ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন ডলার। এ বাজারের মাত্র ১ শতাংশ হিস্যা পেলে বাংলাদেশের সরাসরি রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়াবে ১৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এতে প্যাকেজিং শিল্প দেশের কর্মসংস্থানেও বড় অবদান রাখতে পারে।

Related Posts বাংলাদেশ