শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা যাওয়ায় আজ বাংলাদেশের যেসব স্থানে পালিত হবে ঈদ

সৌদিআরবের সঙ্গে মিল রেখে এসব জেলার বেশকিছু এলাকার বাসিন্দারা রোজা শুরু করেন। সেই হিসেবে রাত পোহালেই ওইসব এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন শুরু করবেন। সকালে ওই সব এলাকায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর, ভোলা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, পিরোজপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম।

ঈদ মোবারক

বাংলা ফ্লো প্রতিবেদক

ঢাকা: সৌদি আরবে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে আজ শনিবার (২৯ মার্চ)। ফলে রাত পোহালেই রোববার (৩০ মার্চ) দেশটিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। প্রতি বছরের মতো এবারও দেশটির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করবেন বাংলাদেশের অন্তত ৮ জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

এর আগে সৌদিআরবের সঙ্গে মিল রেখে এসব জেলার বেশকিছু এলাকার বাসিন্দারা রোজা শুরু করেন। সেই হিসেবে রাত পোহালেই ওইসব এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন শুরু করবেন। সকালে ওই সব এলাকায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর, ভোলা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, পিরোজপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম।

ফরিদপুর

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার প্রায় ১৩ গ্রামে রোববার (৩০ মার্চ) ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করেন তারা।

শনিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সৌদি আরবে আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদের খোঁজ শুরু হয়। পরে রাতে চাঁদ দেখার খবর নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপরই ফরিদপুরের ১৩ গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন করার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের সহস্রাইল, দড়ি সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, বারাংকুলা, বড়গাঁ, মাইটকুমড়া, গঙ্গানন্দপুর, রাখালতলী, কাটাগড়, কলিমাঝি, বন্ডপাশা, জয়দেবপুর ও দিঘীরপাড় গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ আগাম রোজা পালন শুরু করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের প্রায় ১৩টি গ্রামের মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে এক দিন আগে রোজা পালন শুরু করেন। তাই এক দিন আগেই ওই গ্রামগুলোর অধিকাংশ লোকজন ঈদ উদযাপন করে থাকেন।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলার সহস্রাইল দায়রা ঘর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. সাইফুল্লাহ বলেন, শেখর ও পার্শ্ববর্তী রুপাপাত ইউনিয়নের প্রায় ১৩ গ্রামের আংশিক মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আগাম রোজা ও দু’টি ঈদ উদযাপন করে আসছে। এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। সে অনুযায়ী রোববার আমরা ঈদ উদযাপন করবো।

শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় সুরেশ্বর পিরের ভক্তরা আগামীকাল পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন।

জেলার নড়িয়া, জাজিরা, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৩০টি গ্রামের প্রায় ৩২ হাজার লোক যথাযোগ্য মর্যাদায় ঈদের উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন বলে ঢাকা মেইলকে জানান শাহ সুফি সৈয়দ কামাল নূরী সুরেশ্বরী।

রোববার (৩০) মার্চ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে সুরেশ্বরী পিরের মাজার সংলগ্ন মাঠে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

নামাজের জামাতের ইমামতি করবেন মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ বেলাল নূরী সুরেশ্বরী ও মোনাজাত পরিচালনা করবেন গদিনশিন পীর ও মোতাওয়াল্লি হজরত মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ কামাল নূরী সুরেশ্বরী।

চাঁদপুর

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগামীকাল বাংলাদেশে চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এসব গ্রামের সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা প্রায় ৯৫ বছর ধরেই আরব দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। ঈদকে ঘিরে এসব গ্রামে আজ শনিবার রাত থেকে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

সাদ্রা দরবার শরীফের বর্তমান পীর মো. আরিফ চৌধুরী বলেন, প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমরা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি। শনিবার সৌদিতে চাঁদ দেখা গেছে। তাই রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সাদ্রা মাদ্রাসা ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আরও বিভিন্ন এলাকাতেও ঈদের জামাত হবে।

ভোলা

ভোলার পাঁচ উপজেলার ১৪টি গ্রামের প্রায় তিন হাজার পরিবার আগামীকাল ঈদ উদযাপন করবে। সকাল সাড়ে ৮টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী গ্রামে খলিফা মজনু মিয়ার নিজ বাড়ির আঙিনায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। 

মাদারীপুর

আগামীকাল মাদারীপুরের ২৫ গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। জেলার সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের তাল্লুক গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, প্রায় দেড়শ বছর আগে থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে আসছেন সুরেশ্বর দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হজরত জান শরীফ শাহ্ সুরেশ্বরীর (রহ.) অনুসারীরা।

পিরোজপুর

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, সাপলেজা, ঝাটিবুনিয়া, খেতাছিড়া ও চকরগাছিয়া, কাউখালী উপজেলার বেতকা, শিয়ালকাঠী ও পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৭৫ থেকে ৮০টি পরিবার, নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের ৩৫ পরিবার, সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের কদমতলা ও একপাই জুজখোলা গ্রামের প্রায় ৬০টি পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে।

নোয়াখালী

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আগামীকাল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার চার গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদ উদযাপন করবেন। প্রায় ১০০ বছর ধরে বাংলাদেশের একদিন আগেই তারাবির নামাজ পড়ে রোজা শুরু করেন তারা। এ বছরও এসব গ্রামের মানুষ একদিন আগেই পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন বলে জানিয়েছে তারা।

সকাল ৮টা থেকে দুই উপজেলার ৮টি মসজিদে একযোগে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করবেন। গ্রামগুলো হলো- নোয়াখালী পৌরসভা লক্ষ্মীনারায়ণপুর ও হরিণারায়নপুর গ্রাম, বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রাম।

এছাড়া, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কিছু বাসিন্দা রোববার ঈদুল ফিতর পালন করবে।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0