বাংলাফ্লো স্পোর্টস
ঢাকা: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে মাঠে গড়ানোর আগে সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, নতুন কিছু করার জন্য খেলবেন। তবে রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে সেই নতুন কিছু কি সেটা বোঝার উপায় ছিল না দর্শকদের।
রোববার (২০ এপ্রিল) টসে জিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাটিং নেওয়ার পরে মাত্র ৬১ ওভারেই অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠে সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রান সংগ্রহ করতেই তালগোল পাকিয়ে ফেলে নাজমুল হোসেন শান্ত’র দল।
রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর আভাস দেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলাম।
বল ব্যাটে আসছে, সেটিও বোঝা যায়। দুই-তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান এবং উইকেটে সেটও হন তারা। তবে এরপরে টিকতে পারেননি দুজনের কেউই। আউট হন মাত্র ১ রানের ব্যবধানে।
দলীয় ৩১ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে পেসার ভিক্টর নুয়াইসির ডেলিবারিতে ব্যাটের বাইরের কাণায় বল ছুঁইয়ে গালি অঞ্চলে ব্রায়ান বেনেটের হাতে ক্যাচ হন সাদমান। ২৩ বলে ১২ রান করেন বাঁহাতি এ ব্যাটার।
১ রান যোগ হতেই উইকেট বিলিয়ে দেন আরেক ওপেনার জয়ও। ব্যাক টু ব্যাক বোলিংয়ে এসে তাকেও ফেরান নুয়াইসি।
সাদমানের মতো জয়ও ব্যাটের বাইরের দিকে বল লাগিয়ে উইকেটরক্ষক নিয়াশা মায়াভোর হাতে ধরা পড়েন। ৩৫ বলে ১৪ রান করেন ডানহাতি ব্যাটার।
অর্থাৎ দলীয় ৩২ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তৃতীয় উইকেটে ৬৬ রানের জুটি করে বাংলাদেশকে কিছুটা এগিয়ে দেন মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
দলীয় ৯৮ রানের মাথায় আউট হন শান্ত। ৬৯ বলে ৪০ রান করে ব্লেসিং মুজারাবানির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মাধেভেরের হাতে ক্যাচ হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এরপর মুমিনুলের সঙ্গে নতুন ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের জুটি হয় মাত্র ২৫ রানের।
১৮ বলে মাত্র ৪ রান করে ফেরেন মুশফিক। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে শর্ট মিড উইকেটে ব্রায়ান বেনেটের হাতে ধরা পড়েন ডানহাতি অভিজ্ঞ ব্যাটার।
মুশফিকের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি মুমিনুলও।
মাসাকাদজার বলে আউট হওয়ার আগেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফিফটি করে নেন বাঁহাতি ব্যাটার। ১০৫ বলে ৫৬ রান (৮ চার ও ১ ছক্কা) করেন তিনি।
নতুন ব্যাটার মেহেদী হাসান মিরাজ হন মুজারাবানির শিকার। ৪ বলে ১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মেহেদী।
দলীয় ১৩৭ রানে পতন হয় ৬ উইকেটের।
আট নম্বর ব্যাটার তাইজুল ইসলাম টেকেন ১৯ বল। তবে রান করেন মাত্র ৩।
তিনিও হন মাসাকাদজার শিকার। ইনসাইড এজ হয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন তাইজুল।
১৪৬ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপরে স্কোরবোর্ড ভদ্রস্থ করার কাজটা এরপর করেছেন হাসান মাহমুদ এবং জাকের আলী অনিক।
৮ম উইকেটে দুজনের জুটি ৪১ রানের। হাসান মাহমুদ এগুচ্ছিলেন ভালোই। কিন্তু ব্লেসিং মুজারাবানির কাছে হার মানতে হয় তাকে। সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ১৯ রান করে। দলের স্কোর ১৮৭।
বাংলাদেশ ইনিংসের শেষটা করেন ওয়েসলি মাধেভেরে। দলীয় ১৯১ রানে জাকের আলী অনিক এবং নাহিদ রানা ফেরেন চার বলের ব্যবধানে। মুজারাবানি ও মাসাকাদজা পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ২টি করে উইকেটে নিয়াগুচি এবং মাধেভেরের।
সব মিলিয়ে এ দিন প্রথম সেশন যেমন-তেমন। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে যেন একেবারেই তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ দল। ১২৩ রানে ছিল ৩ উইকেট। হঠাৎ খেই হারিয়ে ১৪৬ রানে পতন হয় ৭ উইকেটের।
৫০ ওভারের খেলা শেষে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান করে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনে ৭০ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ হারায় ৫ উইকেটে। এরপরে আসলে ইনিংস বড় করার মতো তেমন কেউ না থাকায় ১৯১ রানেই থামতে হয় বাংলাদেশকে।
সবশেষ ২০০১ সালে এমন এক দিন দেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ঢাকায় সেদিন বাংলাদেশ অলআউট হয় ১০৭ রানে। এরপর আর কখনোই দেশের মাটিতে রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অন্তত ২০০ এর নিচে অলআউট হয়নি টাইগাররা। সেটা হলো একেবারে দুই যুগ পর এসে। সিলেটে খামখেয়ালি ব্যাটিংয়ের চূড়ান্ত রূপ দেখিয়ে মাত্র ১৯১ রানেই গুটিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0