বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: নববর্ষের শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন হওয়ার পর ইউনেস্কোর কাছে আবেদনের বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশি শর্টফিল্ম ‘আলী’র প্রদর্শনের আমন্ত্রণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ করে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন হওয়ার পর বলা হলো নতুন নামের বিষয়ে ইউনেস্কোতে আবার আবেদন করতে হবে। সেই প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয় যাচ্ছে কি না- জানতে চাইলে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, এটার নাম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ, এটা তাদের ব্যাপার, তারা দেখবে।
চারুকলা বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে তারা কোনো সিদ্ধান্ত পাননি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফারুকী বলেন, নাম কী হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন। নাম পরিবর্তনের জন্য ইউনেস্কোর কাছে তারা কবে আবেদন করবেন সেই সিদ্ধান্ত তারা নেবেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন,আমরা যেটা নিয়ে আনন্দিত সেটা হলো এই প্রথম বাংলাদেশে এমন একটা উৎসব দেখেছি, যেখানে সব জাতিগোষ্ঠীকে এক জায়গায় আনা গেছে।
তিনি আরও বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছিল সেটি ভয়ংকর। রাষ্ট্রের মধ্যে আপনি অন্য জাতিগোষ্ঠীগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এটি কোনো দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মোটিফের বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, মোটিফ যারা তৈরি করেছে তারাই এ বিষয়ে বলতে পারবে।
জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আটটি চলচ্চিত্র নির্মাণের অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, অগ্রগতি ধীর। ফান্ড ট্রান্সফারটা শিল্পকলা থেকে দেরিতে গেছে। আটটির জন্য ওয়ার্কশপ শেষ হয়েছে। দুটির ক্রিপ্ট সম্পন্ন হয়েছে।
‘আলী’ টিমকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, কান ফিল্ম ফেস্টিভালে আমাদের একটি ছবি নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিযোগিতা বিভাগে এই প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হলো আদনান আল রাজিব পরিচালিত শর্ট ফিল্ম ‘আলী’।
তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বড় একটি অর্জন। চর্চা ও কষ্টটা শিল্পীরা একা একা করে। এখানে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সাপোর্ট সিস্টেম স্ট্রং নয়। একা একা কষ্ট করে যারা এতদূর পৌঁছালো রাষ্ট্র যদি তাদের ডেকে ধন্যবাদ না জানায় আমি মনে করি এটি সঠিক নয়। আগে আমরা এটা খুব একটা করার চেষ্টা করিনি।
আমরা আজকে তাদের ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য ডেকেছি। ‘আলী’র টিম কানে যাবে। তাদের ঢাকা-প্যারিস বিমান ভাড়া আমাদের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আরও বলেন,সামনে থেকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি পৃথিবীর যে কোনো দেশে আমাদের ভাবমূর্তি যদি বৃদ্ধি করে, সেই কাজের পাশে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থাকবে। নাচ, গান, অভিনয়ের বাইরে স্থাপত্যে আমাদের কোনো স্থপতির যদি বড় ধরনের কোনো অ্যাচিভমেন্ট থাকে সেটাও আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদযাপন করবো।
সংবাদ সম্মেলন ‘আলী’ চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত পুরো টিম উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাফ্লো/এসএস
Comments 0