রাজশাহী প্রতিনিধি: বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাজশাহীর এক নারী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ ওঠেছে প্রেমিক যুবকের বিরুদ্ধে। যদিও সোমবার ভোরে অপহরণের পর মঙ্গলবার রাতেই ওই চিকিৎসক উদ্ধার করেছে র্যাব। গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত যুবকের নাম তানজিম খান তাজ নিরব (৩০)। তিনি পাবনার সাথিয়া থানার বামনডাঙ্গা গ্রামের আবু হানিফের ছেলে। অপহরণের শিকার চিকিৎসকের নাম শাকিরা তাসনিম (২৬)। মেয়ের পারিবারিক সূত্র জানায়, তানজিম নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে চার বছর ধরে শাকিরার সঙ্গে প্রেম করে আসছিলেন। সম্প্রতি তিনি শাকিরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পরে শাকিরার পরিবার জানতে পারে, তানজিম ওরফে নিরব ম্যাজিস্ট্রেট নন। তার প্রকৃত পরিচয় জানতে পেরে বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় শাকিরার পরিবার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শাকিরাকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন তানজিম খান। সোমবার ভোরে অপহরণের শিকার হন ওই নারী চিকিৎসক। রাতে তার বাবা নগরীর চদ্রিমা থানায় মামলা এ ব্যাপারে করেন। মামলার এজাহারে তিনি বিস্তারিত উল্লেখ করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে তানজিম খান তাজ ওরফে নিরবকে। অপহৃত নারী চিকিৎসক শাকিরা তাসনিম দোলাকে (২৬) উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আজ মঙ্গলবার দিনগত রাতে পাবনা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব ৫-অধিনায়ক মেজর মাসুদ জানান, ঢাকা ও রাজশাহীর র্যাবের সদস্যরা পাবনায় যৌথ অভিযান চালান। তারা অপহৃত চিকিৎসক শাকিরা তাসনিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। একই সঙ্গে আসামি তানজিম খান তাজ নিরবকে আটক করা হয়েছে। তাদের রাজশাহীতে আনা হবে। শাকিরার পরিবার জানায়, সোমবার ভোরে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা এলাকার বাসা থেকে শাকিরাকে অপহরণ করেন তানজিমসহ কয়েকজন। এসময় তার বাবা আবু তাহের মো. খুরশীদকেও (৬০) অপহরণ করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় ফেলে যায় অভিযুক্তরা। আর শাকিরার মা রেহেনা পারভীনকে দেয়ালে মাথা ঠুকে আহত করে তারা। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তানজিম খানের বর্তমান ঠিকানা পদ্মা আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর রোডে। তিন-চার বছর আগে তিনি শাকিরার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তখন তিনি নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। সম্প্রতি বিয়ের প্রস্তাব দিলে মামলার বাদী তাতে রাজি হননি। তখন থেকেই তানজিম তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। সোমবার সকালে বাদী আবু তাহের ফজরের নামাজ পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। রাস্তায় উঠলে পেছন থেকে আসামিরা মারধর করে মুখ স্কচটেপ দিয়ে তাকে কালো রঙের গাড়িতে (ঢাকা মেট্টো-চ-১৫-৫০৫২) তোলেন। পরে তার পকেটে থাকা বাসার চাবি নিয়ে বাসার ভেতরে ঢোকেন। ঘরে ঢুকে তানজিম তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে রেহানা পারভীনের মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। পরে তার মেয়েকে গাড়িতে তুলে নেন। রাজশাহী নগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, ‘অপহরণকারী তানজিম নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে চিকিৎসক শাকিরার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে যখন তার পরিবার জানতে পারে, তিনি ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট তখন তারা বিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগে জানা গেছে।