শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া বাদলের মৃত্যুশয্যায় দেওয়া জবানবন্দির একটি মর্মস্পর্শী ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে বাদল তার উপর হামলাকারীদের নাম উল্লেখ করেন, যার মধ্যে বিএনপির নেতা লুৎফর রহমানসহ বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লুৎফর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একদল সশস্ত্র লোক বাদলকে কুপিয়ে জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে ঢাকায় স্থানান্তর করার পথে তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগে হাসপাতালে বাদল তার সহকর্মীদের কাছে হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করেন। ভিডিওটিতে তিনি বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান, তালহা, মেহেদি, শাওন, সৌরভ, আক্কাস, বিপু ও শাহীনসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি অভিযোগ করেন যে, কামারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদলের মৃত্যুর পর শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপি লুৎফর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করে। দলের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া দলের সব নেতাকর্মীকে তার সঙ্গে যেকোনো ধরনের সংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাদলের স্ত্রী পপি বেগম সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে কামারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী এবং দ্বিতীয় আসামি হিসেবে লুৎফর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় আরও ২৩ জনের নাম রয়েছে এবং ১০-১৫ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। নূরে আলম বর্তমানে কারাবন্দি হলেও লুৎফর রহমান পলাতক রয়েছেন।
সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে এবং শিগগিরই জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।
বাদলের স্ত্রী পপি বেগমের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এদিকে একই ঘটনায় আহত সোহাগ আলম ও রহুল আমিন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বাদলের মৃত্যুশয্যায় দেওয়া জবানবন্দি এবং এর পরবর্তী ঘটনাবলি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এখন সবাই ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়।