Logo

খেলাপি ঋণ ১০% ছাড়ালে ব্যাংক লভ্যাংশ দিতে পারবে না

মূলধন ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা অন্য কোনো সংস্থান ঘাটতি থাকলেও লভ্যাংশ দেওয়া যাবে না

বিশেষ প্রতিনিধি: কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশ ছাড়ালে ওই ব্যাংক লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এছাড়া মূলধন ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা অন্য কোনো সংস্থান ঘাটতি থাকলেও লভ্যাংশ দেওয়া যাবে না। এমনকি ভালো মুনাফা করা এবং মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী ব্যাংকগুলোকেও লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা মেনে চলতে হবে। কোনো ব্যাংক পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ বা নিট মুনাফার ৫০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছে, যা ২০২৫ সালের লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।

২০২০ সাল থেকে করোনার প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক লভ্যাংশ বিতরণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে। এর আগে শুধু প্রভিশন সংরক্ষণে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ বিতরণে শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। এবার নতুন নীতিমালায় আরও কঠোর শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। ব্যাংক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা, আর্থিক সক্ষমতা এবং শেয়ারহোল্ডারদের রিটার্নের বিষয় বিবেচনা করে এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো শুধু বিবেচ্য অর্থবছরের মুনাফা থেকে নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে। পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে নগদ লভ্যাংশ দেওয়া যাবে না। এছাড়া, কোনো ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি হলে লভ্যাংশ দেওয়া নিষিদ্ধ হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ। এটি আগের বছরের তুলনায় ২ লাখ ১৩১ কোটি টাকা বেশি।

নীতিমালা অনুযায়ী, সব শর্ত পূরণ করলেও লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে একটি সীমা মেনে চলতে হবে। কোনো ব্যাংক পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

এই নীতিমালা চলতি অর্থবছরের (২০২৪) লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ২০২৪ সালের সমাপ্ত বছরের লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে ২০২১ সালের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। তবে, ২০২১ সালের নির্দেশনায় ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংকগুলোর জন্য ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেওয়ার যে সুযোগ ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংকগুলো ২০২৪ সালের জন্য কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

এই নীতিমালা ব্যাংক খাতের আর্থিক স্বাস্থ্য রক্ষা এবং আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে।

Related Posts বাণিজ্য