ডেস্ক রিপোর্ট: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে রাজনীতিকসহ বিভিন্ন মহলে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। এটিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার খোঁজ নিতে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ বলা হলেও ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ মনে করছেন বিশ্লেষক-রাজনীতিকসহ অনেকে। এমনকি হঠাৎ সেনাপ্রধানের এ সাক্ষাৎ নিয়ে নানা আলোচনাও হচ্ছে। যদিও সাক্ষাতে দুজনের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তা জানা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি উন্নত চিকিৎসার জন্য শিগগিরই বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। অসুস্থতার কারণে তিনি দীর্ঘদিন গুলশানের বাসভবন ফিরোজার চার দেয়ালের মধ্যে রয়েছেন। মাঝেমধ্যেই চিকিৎসাসেবা নিতে তাকে হাসপাতালে যেতে হয়। এর মধ্যেই সেনাপ্রধান সস্ত্রীক তার বাসায় গেলেন। খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার প্রাক্কালে সেনাপ্রধানের এ সাক্ষাৎ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হচ্ছে। সবাই বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন। সাক্ষাতের ব্যাপারে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে তারা জানায়, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে এটা একান্তই সৌজন্য সাক্ষাৎ। গত বৃহস্পতিবার রাতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সস্ত্রীক গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় যান। প্রায় ৪০ মিনিট সেনাপ্রধান তার বাসায় ছিলেন। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, কিছু সময় তারা একান্তে কথা বলেন। সেনাপ্রধান খালেদা জিয়ার বাসভবনে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর। খালেদা জিয়ার অন্য একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বলেন, ‘ওনারা একান্তে কথা বলেছেন। এ সময় বিএনপির অন্য কোনো নেতা ছিলেন না।’ বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এ বিষয়ে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে এর আগে প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তিনি যাননি। তখন কোনো কোনো পত্রিকায় এমন খবর লেখা হয়েছিল যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তিনি যাচ্ছেন না। এমন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে হয়তো তার সঙ্গে সেনাপ্রধান দেখা করেছেন। এটা আমার ধারণা।’ এক-দেড় মাস ধরে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছিল। কয়েক দফা তারিখও নির্ধারণ হয়েছিল। সবকিছু ঠিক থাকলে খালেদা জিয়া আগামী সপ্তাহে লন্ডনে যেতে পারেন বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ৭৯ বছর বয়সী প্রবীণ এই রাজনীতিক বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। দীর্ঘ কারাভোগের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট তাকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি বাসায় ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।