লাইফস্টাইল ডেস্ক
ঢাকা: বর্তমানে আলোচনায় উঠে এসেছে একটি নতুন ধরনের ডায়েট পদ্ধতি যা অনুসরণ করে মাত্র ৪ সপ্তাহেই ওজন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এই ডায়েট পদ্ধতির নাম ‘সুইচ অন ডায়েট’।
কোরিয়ান চিকিৎসক ড. ইয়ং-উ পার্ক দীর্ঘ ৩৩ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি করেছেন এই ডায়েট পদ্ধতি, যা মাত্র চার সপ্তাহে শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে বলে দাবি করেছেন তিনি। শুধু ওজন কমানো নয়, এই ডায়েট মাংসপেশি টিকিয়ে রাখার দিকেও গুরুত্ব দেয়।
এই ডায়েটে দৈনিক অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবে, কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা ঘুমাতে হবে, পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে, সপ্তাহে অন্তত চারবার উচ্চমাত্রার ওয়ার্কআউট করতে হবে এবং রাতে ঘুমানোর চার ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, প্রসেসড খাবার এবং চিনি গ্রহণও কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে। শরীরকে কিটোসিস অবস্থায় নিয়ে যেতে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণও কমানো হয়।
পুরো ডায়েট পরিকল্পনা চারটি ধাপে বিভক্ত:
১ম সপ্তাহ: ডিটক্স ও অন্ত্র পরিষ্কার
প্রথম তিন দিন শুধুমাত্র চারবার প্রোটিন শেক খেতে হবে এবং খালি পেটে প্রোবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিন এক ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি করতে হবে। খাবারের তালিকায় থাকবে, বাঁধাকপি, শসা, ব্রকলি, টফু আনস্যুইটেনড দই। পরবর্তী চারদিনে খাদ্যতালিকায় যোগ হবে— মাছ, মুরগির মাংস, ডিম, চর্বিমুক্ত গরুর মাংস। এছাড়াও ময়দা, দুগ্ধজাত খাবার ও কফি নিষিদ্ধ।
২য় সপ্তাহ: ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং
এই সপ্তাহে একদিন ২৪ ঘণ্টার উপবাস রাখতে হবে এবং তা উচ্চ-প্রোটিন ডিনার দিয়ে শেষ করতে হবে। খাদ্যতালিকায় থাকবে—
দুইবার প্রোটিন শেক
দুপুরে কম কার্ব যুক্ত খাবার (যেমন: ভাত ও সবজি)
রাতে কার্বহীন প্রোটিন খাদ্য
সাপ্লিমেন্ট হিসেবে বাদাম, ডাল, কালো কফি রাখা যেতে পারে। এই সপ্তাহে ফাস্টিংয়ের দিনে উচ্চমাত্রার ব্যায়াম নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন: সেদ্ধ না ভাজা,পুষ্টিবিদরা কী বলছেন ডিম খাওয়ার সেরা উপায় কোনটি
তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহ:
৩য় সপ্তাহে দুই দিন ২৪ ঘণ্টার না খেয়ে থাকা
৪র্থ সপ্তাহে তিন দিন না খেয়ে থাকতে হবে
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকবে—
দুইবার প্রোটিন শেক
দুইবার কম কার্বযুক্ত খাবার (যেমন: কুমড়ো, চেরি টমেটো, বাদাম, বেরি জাতীয় ফল)
ওয়ার্কআউটের পরে: মিষ্টি আলু বা কলা, যা শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়
চার সপ্তাহের পরেও প্রাপ্ত শরীরের পরিবর্তন ধরে রাখতে প্রতি সপ্তাহে একদিন ২৪ ঘণ্টার না ফাস্টিং করতে বলছেন বিশেষজ্ঞ। এছাড়া অন্যান্য দিন ১৪ ঘণ্টার ফাস্টিং চালিয়ে যেতে হবে।
‘সুইচ অন ডায়েট’ এমন একটি পরিকল্পনা যা স্বল্প সময়ে মেদ কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য ধরে রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে যেকোনো ডায়েট শুরু করার আগে একজন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
এই ডায়েটে কঠোর নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়, তাই শারীরিক অসুস্থতা থাকলে এটি অনুসরণ না করাই ভালো।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বাংলাফ্লো/আফি
Comments 0