বাংলাফ্লো ডেস্ক
ঢাকা: গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ-এর নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এক বিবৃতিতে জানান, গাজার শিশুরা অবিরাম বোমাবর্ষণের পাশাপাশি খাদ্য, চিকিৎসা ও জীবনরক্ষাকারী সেবাসমূহ থেকেও বঞ্চিত। প্রতিদিন সহায়তা অবরুদ্ধ হওয়ায় ক্ষুধা, রোগ ও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে।
গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার জন্য সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধ রেখেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, তাদের খাদ্য মজুদ শেষ হয়ে গেছে, এবং হাজারো মানুষের ওপর নির্ভরশীল কমিউনিটি কিচেনগুলোও বন্ধ হওয়ার মুখে।
এক ফিলিস্তিনি বাবা আমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেন, “আমরা খাবার পুষ্টিকর কি না জিজ্ঞেস করি না, শুধু চাই আমাদের সন্তানেরা যেন না খেয়ে না মরে।”
ইসরায়েল বলছে, হামাসের কাছে আটক বন্দীদের মুক্ত করতে চাপ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই অবরোধ। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এর ফলে কোনো বন্দী মুক্ত হয়নি এবং এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।
হামাস নেতা আব্দুর রহমান শাদিদ বলেন, “ইসরায়েল ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। শিশুরা শুধু বোমায় নয়, দুধের অভাবেও মারা যাচ্ছে।”
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই অবরোধ চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের সরাসরি লঙ্ঘন।
গাজা সিটির ফিলিস্তিনি এনজিও নেটওয়ার্কের পরিচালক জানান, হাসপাতালে অপুষ্ট শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ বা খাদ্য নেই। উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ আবু নাসির বলেন, শিশুরা প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও চর্বিসহ পুষ্টি উপাদান থেকে বঞ্চিত, যা তাদের বিকাশের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সূত্র : আল-জাজিরা
বাংলাফ্লো/আফি
Comments 0